উত্তর পূর্ব ভারতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে অসমের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরমপন্থী গোষ্ঠী ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট অফ বোড়োল্যান্ড-এর (NDFB) সঙ্গে সোমবার চুক্তি সম্পাদন করল সরকার। ওই চুক্তিতে সই করেছে পৃথক বোড়োল্যান্ডের দাবিদার অল বোড়ো স্টুডেন্টস ইউনিয়নও (ABSU)।
চুক্তি সম্পাদনে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল। নিজের ভাষণে অমিত শাহ বলেন, ‘আজ কেন্দ্রীয় সরকার, অসম সরকার ও বোড়ো প্রনিধিদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সম্পাদিত হল। এর ফলে অসম ও বোড়ো জাতির ভাষা ও সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল ভবিষ্যত্ সুনিশ্চিত হল।’
এই ত্রিপাক্ষিক চুক্তির জেরে পৃথক বোড়োল্যান্ড রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ব্যতিরেকে জনজাতির জন্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হল।
আরও পড়ুন: অসমে আত্মসমর্পণ ৬৪৪ জন জঙ্গির, প্রত্যাবর্তনের হুমকি উলফা প্রধানের
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন, চুক্তিপত্রে সই করেছেন বোড়ো সমাজের সব পক্ষ, যার সুবাদে অসমে এই জনজাতির ঐক্য প্রমাণিত হয়েছে। পাশাপাশি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, আগামী ৩০ জানুয়ারি ১৩০টি অস্ত্র-সহ মোট ১,৫৫০ জঙ্গি আত্মসমর্পণ করতে চলেছেন। তাঁদের পুনর্বাসনের জন্য সমস্ত ব্যবস্থা করেছে সরকার।
গত ২৭ বছরে এই নিয়ে তৃতীয় বোড়ো চুক্তি সম্পাদিত হল অসমে। রাজ্যে পৃথক বোড়োল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলনে এ পর্যন্ত কয়েকশো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই কারণে অসমের বোড়ো অধ্যুষিত অঞ্চলে দ্রুত শান্তি ফিরিয়ে আনায় উদ্যোগী হয়েচে কেন্দ্রীয় সরকার।
উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালে প্রথম বোড়ো চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল রাজ্য সরকার এবং বোড়ো ছাত্র সংগঠনের (আবসু) মধ্যে। এর জেরে গঠন করা হয় সীমিত রাজনৈতিক ক্ষমতা সম্পন্ন বোড়োল্যান্ড অটোনমাস কাউন্সিল।
২০০৩ সালে দ্বিতীয় বোড়ো চুক্তি সম্পাদিত হয় রাজ্য সরকার এবং বোড়ো জঙ্গি সংগঠন বোড়ো লিবারেশন টাইগার্স গোষ্ঠীর মধ্যে। তার জেরে গঠিত হয় বোড়োল্যান্ড আঞ্চলিক কাউন্সিল (বিটিসি), যার আওতায়ভুক্ত হয় অসমের কোকড়াঝাড়, চিরাং, বাসকা ও উদালগুড়ি জেলা নিয়ে তৈরি বোড়োল্যান্ড টেরিটোরিয়াল এরিয়া ডিস্ট্রিক্ট বা বিটিএডি। শিক্ষা, অরণ্য, বাগিচা-সহ ৩০টি দফতরের দায়িত্ব রয়েছে এই কাউন্সিল, যদিও বিচার ব্যবস্থা ও পুলিশের নিয়ন্ত্রণ তাদের দেওয়া হয়নি।