আগে সমস্ত যোগ্য প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার সম্পূর্ণ টিকাকরণ হোক। তারপর তৃতীয় ডোজ নিয়ে মাথা ঘামানো যাবে। শুক্রবার বুস্টার ডোজ নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিল কেন্দ্রীয় সরকার।
সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা বলছে, SARS-CoV2 ভাইরাসের অতি-সংক্রমণযোগ্য স্ট্রেন প্রতিরোধ করতে ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ প্রয়োজন হতে পারে।
অনেক দেশে ইতিমধ্যেই বুস্টার ডোজ দেওয়া হচ্ছে। তাদের মতো ভারত কেন তৃতীয় শট শুরু করেনি সেই নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। তার উত্তরে নীতি আয়োগের স্বাস্থ্য সদস্য ভি কে পল বলেন, 'পুরো ব্যবস্থাটা বিজ্ঞান, স্থানীয় মহামারীবিদ্যা এবং সংস্থানের উপর নির্ভরশীল। এই সময়ে ভ্যাকসিনের জোগান ভালই আছে। আমাদের খুব দক্ষ দল রয়েছে যারা এটি পরীক্ষা করছে। সময় অনুযায়ী যা করণীয় তা অবশ্যই করা হবে।
চিন বাদ দিলে বিশ্বজুড়ে দিনে গড়ে সবচেয়ে বেশি ডোজ টিকা দিচ্ছে মোদী সরকার। আপাতত দেশের টিকা পাওয়ার যোগ্য(বয়স ও অন্যান্য শর্তের ভিত্তিতে) জনসংখ্যার ১০০%-র টিকার প্রাপ্যতা নিশ্চিত করাই লক্ষ্য কেন্দ্রের। একবার তা হয়ে গেলে দেশের প্রত্যেকের করোনার বিরুদ্ধে লড়ার মূল ভিত্তি থাকবে। তারপরে প্রয়োজনমাফিক বুস্টার ডোজের আয়োজন করা যাবে।
বিভিন্ন গবেষণাই তৃতীয় ডোজের দিকে ঝুঁকছে। গত সপ্তাহে, ব্রিটেনের একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, AstraZeneca/Oxford ভ্যাকসিনের দুটি শট ওমিক্রন সংক্রমণের বিরুদ্ধে কার্যত কোন সুরক্ষাই প্রদান করে না। এদিকে তৃতীয় ডোজ নিলেই সুরক্ষা প্রায় ৭১% বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এটি তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এই ভ্যাকসিনের ভারতীয় সংস্করণ Covishield ভারতেও প্রয়োগ করা হচ্ছে।
কিছু বিশেষজ্ঞদের মতে ভারতের এখনই বুস্টার ডোজ শুরু করা উচিত ছিল। অন্তত কো-মর্বিডিটি, বয়স্ক এবং স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের জন্য। 'ইজরায়েল, কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে ছয় মাস টিকা দেওয়ার পরে অনাক্রম্যতা ২০% থেকে ৫০% হয়। সুতরাং, বুস্টার যে গুরুত্বপূর্ণ তাই নিয়ে কোন প্রশ্নের অবকাশ নেই। বয়স্ক ব্যক্তিরা, যাঁদের কমরবিডিটি আছে এবং ফ্রন্টলাইন কর্মীদের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত,' বলছেন ডাঃ জিসি খিলনানি, AIIMS-এর পালমোনোলজি বিভাগের প্রাক্তন প্রধান এবং PSRI ইনস্টিটিউট অফ পালমোনারি অ্যান্ড ক্রিটিক্যাল কেয়ারের চেয়ারম্যান৷
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে ৮৮% কভারেজের কাছাকাছি (অন্তত একটি ডোজ) ভারত। এখনই সময় বুস্টার ডোজ চালু করে দেওয়ার। বিশেষত যখন ইতিমধ্যেই ধীরে ধীরে ওমিক্রণের মতো শক্তিশালী ভেরিয়েন্ট ছড়াতে শুরু করে দিয়েছে, তখন আর অপেক্ষা না করাই ভাল।
শুক্রবার টিকা নিয়েছেন ৬২.০৬ লক্ষেরও বেশি মানুষ। এখনও পর্যন্ত দেশে ১৩৬.৬৬ কোটি ডোজেরও বেশি করোনা টিকা দেওয়া হয়েছে।