সোনার গয়না কেনার সময় হলমার্ক দেখে নেওয়া জরুরি। সোনা খাঁটি কি না, তা নিশ্চিত করে এই চিহ্ন। কিন্তু কী করে বুঝবেন, তাতেও গলদ আছে কি না? দেখে নেওয়া যাক তার নিয়ম-কানুন।
সোনার শুদ্ধতা সম্পর্কে শংসাপত্র দেয় বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্র ও হলমার্কিং সেন্টার (এএইচসি) এবং ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস (বিআইএস)। ২০২০ সাল থেকে সোনায় হলকার্ক থাকা আবশ্যিক করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সোনায় হলমার্ক বসানোর জন্য হলমার্কিং সেন্টারগুলির কর্মপদ্ধতির উপর বেশ কিছু শর্তাবলী আরোপ করেছে বিআইএস। কিন্তু এই প্রক্রিয়া আরও নিখুঁত হওয়া প্রয়োজন, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্ব গোল্ড কাউন্সিলের ভারতীয় শাখার ম্যানেজিং ডিরেক্টর পি আর সোমসুন্দরমের মতে, ‘হলমার্ক হল বিশ্বাসের প্রতীক। হলকার্কিং সেন্টারগুলি অত্যন্ত ভালো মানের পরীক্ষা পদ্ধতি অনুসরণ করছে কি না, তা যাচাই করা দরকার।’
তবে হলমার্কের সত্যতা আপনি নিজেও যাচাই করতে পারেন। হলমার্কিং পদ্ধতির প্রাথমিক ৪টি চিহ্ন হল বিআইএস প্রদত্ত ত্রিভুজাকৃতি চিহ্ন, ক্যারাট সম্পর্কীয় তথ্য (22K915), যা সোনার শুদ্ধতা নিশ্চিত করে, গয়না সংস্থার মার্কা এবং এএইচসি-এর চিহ্ন।
গয়না সংস্থার বিআইএস লাইসেন্স
সব সময় বিআইএস নথিভুক্ত গয়না বিপণি থেকেই সোনার গয়না কেনা উচিত। সারা ভারতে প্রায় ৩০ হাজার বিআইএস নথিভুক্ত সোনার গয়না বিপণন সংস্থা রয়েছে। এই তালিকা বিআইএস ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। আপনি গয়না বিপণন সংস্থার বিআইএস লাইসেন্স দেখতেও চাইতে পারেন। বিপণিতে এই লাইসেন্স সকলের দেখার জন্য রাখা বাধ্যতামূলক। মনে রাখবেন, লাইসেন্সে উল্লিখিত ঠিকানা ও দোকানের ঠিকানায় যেন তফাৎ না থাকে।
গয়নার বিলে উল্লেখ
আপনার বিলটি খুঁটিয়ে দেখুন। নিয়ম অনুযায়ী, বিলে হলমার্ক বাবদ চার্জ আলাদা উল্লেখ করার কথা বিপণন সংস্থার। প্রতি গয়নায় ৩৫ টাকা হিসেবে হলমার্কিং চার্জ ধার্য করেছে এএইচসি।
বিআইএস নথিভুক্ত সংস্থা অন্য কোনও বিআইএস নথিভুক্ত সংস্থার তৈরি গয়নাও বিক্রি করতে পারে। গয়নার রসিদে হলমার্কিং চার্জ, হলমার্কযুক্ত গয়না কেনা ও বিক্রির যাবতীয় তথ্য রসিদে উল্লেখ করতে হবে বিপণন সংস্থাকে। সোনার গয়না বিক্রি ও কেনার জন্য ৫ বছর সময়কাল ধার্য করেছে বিআইএস।
এএইচসি-এর বিশদ তথ্য
এএইচসি-এর খুঁটিনাটি তথ্য পাওয়া যায় বিআইএস তালিকায়। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত বিআইএস স্বীকৃত মোট ৮৭৭টি এএইচসি রয়েছে দেশজুড়ে। ওই তালিকা থেকেই এএইচসি-এর চিহ্ন যাচাই করে নেওয়া যায়। যে সমস্ত এএইচসি০-এর লাইসেন্স বাতিল বা সাসপেন্ড করা হয়েছে, তাদের নামও রয়েছে বিআইএস তালিকায়।
নিজেও পরীক্ষা করাতে পারেন সোনা
বিআইএস তালিকাভুক্ত যে কোনও এএইচসি থেকে আপনি নিজেও সোনার গয়না পরীক্ষা করাতে পারেন। সাধারণ ক্রেতাদের কেনা গয়না পরীক্ষা করতে নির্দিষ্ট অর্থ চার্জ করে এএইচসি। পরীক্ষা করার পরে গয়না সম্পর্কে একটি রিপোর্ট দেয় এএইচসি। রিপোর্টে সোনার মান খারাপ বের হলে গ্রাহকের ফি ফেরত দেয় এএইচসি। ওই রিপোর্ট গয়না বিক্রেতা সংস্থার কাছে দাখিল করতে পারেন গ্রাহক, যার জন্য তাঁকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য বিক্রেতা।