বিজেপি শাসিত হরিয়ানায় বাংলা থেকে যাওয়া এক পরিযায়ী শ্রমিককে বেধড়ক মারধর করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল যে তিনি তার ঝুপড়িতে গোমাংস রেখেছেন। এরপর তাঁকে কার্যত গণপিটুনি দেওয়া হয়েছিল। এরপর সেই মাংস ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছিল। শনিবার পুলিশ জানিয়েছে সেখানে যে মাংস পাওয়া গিয়েছিল তা গো মাংস নয়। কার্যত ওই ব্যক্তির কাছে গরুর মাংস না থাকা সত্ত্বেও কেন তাকে এভাবে মারধর করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
এদিকে ২২ বছর বয়সি সাবির মালিককে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছিল যে তিনি গো মাংস খান। এদিকে এই ঘটনায় ১৬জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। পুলিশ ইতিমধ্যেই ১০জনকে গ্রেফতার করেছে।
সূত্রের খবর সাবির একটি ঝুপড়িতে বাস করতেন। সেখানে তার স্ত্রী ও সন্তানও থাকত। তিনি কাগজ কুড়নোর কাজ করতেন। হরিয়ানার চারখি দাদরি জেলায় এই ঘটনা হয়েছিল।
ডিএসপি ভারত ভূষণ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মাংসের নমুনা ওই ঝুপড়ি থেকে সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়েছিল। ফরিদাবাদের একটি ল্যাবে সেটা পাঠানো হয়েছিল। আমরা তার রিপোর্ট পেয়েছি। সেখান থেকে বলা হয়েছে এটা গরুর মাংস নয়।
এদিকে মালিককে মারধর করার আগে কয়েকজন যুবক পুলিশের কাছে খবর দিয়েছিল যে ওই গ্রামের মধ্য়ে গরুর মাংস রান্না করা হচ্ছে। এরপর পুলিশ সেই মাংস বাজেয়াপ্ত করেছিল। এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, প্লাস্টিকের বোতল দেওয়া হবে এই অছিলায় ওই যুবককে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর শুরু হয় মার। তাকে অন্য় একটি জায়গায় নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়। এত মারধর করা হয়েছিল যে তিনি মারা যান। পরে তার দেহ ওই ঝুপড়ির কাছ থেকে মিলেছিল।
এদিকে জমায়তে উলেমা হিন্দ তখনই বলেছিল হরিয়ানায় ভোটের আগে মেরুকরণের জন্য় এসব করা হচ্ছে। এদিকে হরিয়ানা পুলিশ এবার ল্যাবের রিপোর্ট আদালতে জমা দেবে।
এদিকে সাবিরের মৃত্যু পরেও সতর্ক হয়নি গো রক্ষকরা। কয়েকজন গো রক্ষক দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আরিয়ান মিশ্র নামে এক ছাত্রকে গুলি করে মেরে ফেলে। পরে তারা জানিয়েছিল গো পাচারকারী মনে করে তারা মেরে ফেলেছে।
এদিকে ওই গোরক্ষররা মূলত বজরং দলের সদস্য। তাদের একাংশ বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। তাদের পেছনে স্থানীয় বিজেপি নেতাদের মদত রয়েছে।