নতুন করে উত্তপ্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। শনিবারই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা ঘোষণা করেছিলেন যে সোমবার থেকে তারা অসহযোগ আন্দোলনে নামছেন। এমনকী তারা জানিয়েছিলেন যে তাদের একটাই মাত্র দাবি, সেটা হল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ। আর রবিবার সকাল হতেই দেখা গেল দলে দলে আন্দোলনকারীরা রাস্তায় নেমে এসেছেন। সকাল থেকেই শুরু হয়ে গেল তীব্র আন্দোলন।
এদিকে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সব মিলিয়ে এই আন্দোলনের জেরে ৪০জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। বিভিন্ন জায়গায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এর আগে শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছিল। এবার আওয়ামি লিগের অফিসে, থানাতেও হামলা চালানো হয়েছে বলে খবর।
এনিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, এখন যারা নাশকতা করছে তারা কেউই ছাত্র নন। এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তারা সকলেই সন্ত্রাসী বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে একটি বার্তায় এনিয়ে জানানো হয়েছে।
এর আগে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছিলেন, যদি পরিস্থিতি তৈরি হয়, যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন, তাহলে মন্ত্রিত্ব ছাড়তেও প্রস্তুত রয়েছি। সেই সঙ্গেই তিনি জানিয়েছেন, পড়ুয়াদের সব দাবি পূরণ করা হয়েছে। তাদের এই অসহযোগ আন্দোলনের দাবি তুলে নেওয়া উচিত। সেই সঙ্গেই তিনি জানিয়েছেন, বিএনপি দেশবিরোধী। বিএনপি ও জমায়াতের ফাঁদে পা দিয়ে আন্দোলনকারীরা এখন আন্দোলনকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে রবিবার যেভাবে ফের অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল বাংলাদেশ তার জেরে উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে ভারতের প্রতিবেশী দেশে। রংপুরে শাসকদল আওয়ামী লিগের সাংসদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সাংসদ আবুল কালাম আহসানুল হক চৌধুরীর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট এলাকায় আওয়ামী লিগ এবং তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্র লিগের কর্মী–সমর্থকদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ছোঁড়ে। দু’পক্ষের সংঘর্ষে আটজন আহত হয়েছে বলে খবর। চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন স্থানীয় মুদি ব্যবসায়ী মহম্মদ শহিদ।
বাংলাদেশের সংবাদপত্র ‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, টাঙ্গাইলে এক সাংসদ সদস্যের পেট্রোলপাম্প, রেস্তোরাঁয় অগ্নিসংযোগ ঘটানো হয়েছে বলে খবর। এছাড়াও ভোলায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ছাত্রলিগ ও পুলিশের সংঘর্ষে তপ্ত ছিল এলাকা। আওয়ামি লিগের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে খবর।
বাংলাদেশের সরকার সেখানে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬ টা থেকে কার্ফু জারি করেছে। অনির্দিষ্টকালের জন্য জারি করা হয়েছে কার্ফু। এদিকে, বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাসের অ্যাসিসটেন্ট হাইকমিশনার এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট করেন। সেখানে শিলেটে অ্যাসিসটেন্ট হাইকমিশনারের আওতার মধ্যে যাঁরা রয়েছেন, সেই ভারতীয়দের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আর দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে। আপৎকালীন নম্বর +88-01313076402 এ যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।