অশান্ত বাংলাদেশে কয়েক ঘণ্টার জমাটি 'নাটক'! সৌজন্যে তিন ডাকাত! যারা নাকি ডাকাতি করতে ঢুকেছিল ঢাকা শহরের একটি ব্যাঙ্কে। কিন্তু, শেষমেশ তাদের বুঝিয়ে-সুজিয়ে আত্মসমর্পণ করাতে সমর্থ হন নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যারা।
বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটে ঢাকার দক্ষিণ কেরানিগঞ্জের চুনকুটিয়া পাকাপোল এলাকায় অবস্থিত রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তরফে দাবি করা হয়েছে, এদিন স্থানীয় সময় দুপুর ২টো নাগাদ ওই তিন ডাকাত ব্যাঙ্কের ভিতর ঢুকে পড়ে।
সেই খবর জানাজানি হতেই একযোগে আসরে নামে পুলিশ, বাংলাদেশের ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন বা ব়্যাব এবং সেনাবাহিনী। সংবাদমাধ্যমে দাবি ছিল, ওই তিন ডাকাত ব্যাঙ্কের ভিতরে ঢুকেই সেখানে থাকা লোকজনকে পণবন্দি করে নেয়।
এদিকে, ডাকাত আসার খবর চাউর হতেই এলাকায় উৎসাহী মানুষের ভিড় জমতে থাকে। বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ভিড়ের সেই ছবি দেখা গিয়েছে। অন্যদিকে, ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রথমেই সেটি ঘিরে ফেলেন নিরাপত্তাকর্মীরা।
প্রসঙ্গত, ব্যাঙ্কে যে ডাকাত পড়েছে, স্থানীয় মসজিদের তরফে মানুষকে সতর্ক করতে সেই ঘোষণা করা হয়েছিল। তাতেই অতি-উৎসাহী মানুষজন পিল পিল করে ব্যাঙ্কের চারপাশে জমা হতে শুরু করেন!
তারপর ডাকাতদের সঙ্গে 'আলোচনা' শুরু হয়। নিরাপত্তাবাহিনী ও পুলিশের তরফে চেষ্টা করা হয়, যাতে ডাকাতদের বুঝিয়ে আত্মসমর্পণ করানো যায়। কিন্তু, ডাকাতরা পালটা দাবি করে, তাদের নগদ ১৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে। এবং ব্যাঙ্ক থেকে নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। তাহলেই তারা চলে যাবে!
স্বাভাবিকভাবেই প্রশাসনের তরফে এই দাবি মানা হয়নি। এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সর্বশেষ যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, সেই অনুসারে - তিন ডাকাতই শেষমেশ আত্মসমর্পণ করেছে। সংশ্লিষ্ট এক আধিকারিক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওই ডাকাতদের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।
এদিন, স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৩০ মিনিট নাগাদ ওই তিন ডাকাতকে একটি সাদা রঙের মাইক্রো বাসে উঠিয়ে ঘটনাস্থল থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের কাছ থেকে তিনটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
ডাকাতরা আত্মসমর্পণ করার পর পণবন্দিদের ব্য়াঙ্ক থেকে বের করে আনার ব্যবস্থা করা হয়। সৌভাগ্যক্রমে তাঁদের মধ্যে কেউই হতাহত হননি।
প্রসঙ্গত, হাসিনা সরকার উৎখাত হওয়ার পর থেকেই অশান্ত বাংলাদেশ। প্রতিদিনই কোনও না কোনও জায়গা থেকে অশান্তির খবর আসছে। এই প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবারের ঘটনা নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী। যার জেরে বেশ কয়েক ঘণ্টা কার্যত এক টানাটান নাটকের সাক্ষী থাকলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।