সুনেত্রা চৌধুরী এবং ঔরঙ্গজেব নকশবন্দী
গালওয়ান সংঘর্ষের পর দলের বিদেশনীতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হয়নি। তা সত্ত্বেও সর্বদলীয় বৈঠকে সরকার-বিরোধী অবস্থান নিয়েছিলেন সোনিয়া গান্ধী। শুধু তাই নয়, দলও চালাচ্ছেন তিন গান্ধী। বাকিদের সঙ্গে ন্যূনতম আলোচনাও করা হচ্ছে না। এমনই অভিযোগ করলেন কমপক্ষে ১০০ জন কংগ্রেস নেতানেত্রী। যাঁরা চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-কে এক স্বাক্ষরকারী কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘তিনজন দল চালাচ্ছেন - সোনিয়া গান্ধী, রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। গত তিন বছরে কোনও বিষয়ে কারোর সঙ্গে কিছু আলোচনা করা হয়নি।’ শুধু তাই নয়, তাঁদের কাছে পৌঁছাতে পারেন শুধু সাধারণ সম্পাদক কে সি ভেনুগোপাল এবং জাতীয় মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা।
‘হিন্দুস্তান টাইমস’ জানতে পেরেছে, গত জুনে গালওয়ান সংঘর্ষের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে সর্বদলীয় বৈঠকে ডেকেছিলেন, সেখানে সরকারের সমর্থনে মুখ খুলেছিল সব দল। গোয়েন্দা ব্যর্থতা নিয়ে মোদী সরকারের বিরোধিতা করেছিলেন একমাত্র সোনিয়া। এক নেতা বলেন, ‘এটা গুরুত্বপূর্ণ বিদেশ বিষয়ক নীতি। তা সত্ত্বেও দলের যে নেতারা বিদেশনীতির বিষয়টি দেখেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করা যায়নি। একটাই বিষয় ছিল যে দলের মধ্যে একমতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।’
রবিবার সন্ধ্যায় যে নেতারা দেখা করেছিলেন, রাহুলের চারপাশে ‘ঘনিষ্ঠ বৃত্ত’ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। এক স্বাক্ষরকারী বলেন, ‘ওঁরা বাচ্চা। আমাদের কেন কোনও নির্বাচিত সংসদীয় বোর্ড নেই? কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি হোক বা বর্ধিত কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি, সবক্ষেত্রেই সবাই কেন মনোনীত হন?’
সদ্য বিজেপিতে যাওয়া জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া যেমন সেই অস্বস্তি বাড়িয়েছেন, তেমনই অধীর চৌধুরীকে লোকসভার দলনেতা বা অজয় মাকেনকে সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হওয়ায় অনেক নেতাই ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। এক নেতা বলেন, ‘কোনও পদে নিযুক্তির জন্য কোন ব্যক্তি কোন মাপকাঠির ভিত্তিতে যোগ্য হবে, তা নিয়ে কোনও ধারণা নেই। মাকেন বা অধীরের বিরুদ্ধে কোনও বিষয় নেই। কিন্তু কেন কোনও আলোচনা হবে না?’
যদিও কংগ্রেসের অন্য অংশের বক্তব্য, ব্যক্তিগত অনিশ্চয়তা থেকেই এইসব দাবি করা হচ্ছে। সেই ক্যাম্পের সদস্যদের বক্তব্য, বিরোধী দলনেতা হিসেবে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি গুলাম নবি আজাদের মেয়াদ শেষ হবে এবং তিনি যে পরের দফায় সেই পদ পাবেন, সে বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা নেই। গুলাম নবি আবার হরিয়ানায় কংগ্রেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। একইসঙ্গে রাজ্যসভায় মল্লিকার্জুন খাড়গের অন্তর্ভুক্তির ফলে আনন্দ শর্মার সংসদের নেতা হওয়ার সম্ভাবনা কমেছে। তাঁর মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২২ সালের এপ্রিলে। এক কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘অন্যদের মনে হবে, দলে একঘরে করে রাখা হয়েছে।’