সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদন পেয়ে নিম্ন আদালতের তিন বিচারককে বরখাস্ত করল বিহার সরকার। ২০১৩ সালে নেপালের এক অতিথিশালায় মহিলাদের সঙ্গে তাঁদের ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখা গিয়েছিল বলে অভিযোগ। তাঁদের বিরুদ্ধে সরকারের এই পদক্ষেপ উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বিহার প্রশাসন।
গত ২০১৯ সালের ৮ নভেম্বর রাজ্য সরকারকে ওই তিন বিচারককে অপসারণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুমোদন দেয় শীর্ষ আদালত। অইভিযুক্ত তিন বিচারক হলেন আরারিয়ার তৎকালীন দায়রা বিচারক কোমল রাম, আরারিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও মহকুমা বিচারক জিতেন্দ্রনাথ সিং এবং সমস্তিপুর পারিবারিক আদালতের তৎকালীন মুখ্য বিচারক হরি নিবাস গুপ্তা।। অভিযোগ, প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানের পরে তাঁরা সীমান্ত পেরিয়ে নেপালের বিরাটনগরে পৌঁছেছিলেন। বিরাটনগর বাস স্ট্যান্ডের কাছে এক অতিথিশালায় তল্লাশি অভিযানে গিয়ে কয়েক জন মহিলার সঙ্গে তাঁদের ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখতে পায় পুলিশ।
২০১৩ সালের ২৯ জানুয়ারি ঘটনার রিপোর্ট নেপালি সংবাদপত্র ‘উদঘোষ’-এ প্রকাশিত হলে বিষয়টি জনসমক্ষে আসে। রিপোর্টে লেখা হয়েছিল, বিহার বিচার বিভাগে দায়িত্বপূর্ণ পদে আসীন জানার পরে তিন বিচারককে ছেড়ে দেয় বিরাটনগর পুলিশ।
নেপালি সংবাদপত্রের সেই প্রতিবেদনেক ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয় পটনা হাই কোর্ট। জেলা ও দায়রা বিচারকের তত্ত্বাবধানে অনুসন্ধানের পরে জমা দেওয়া রিপোর্টে দাবি করা হয়, ঘটনার দিন ভারতেই ছিলেন তিন অভিযুক্ত। শুধু তাই নয়, ভুল প্রতিবেদন ছাপার জন্য সংবাদপত্রের তরফে দুঃখ প্রকাশ করে বিজ্ঞপ্তি ছাপা হয়েছে বলেও জানান তদন্তকারী বিচারক।
জেলা ও দায়রা বিচারকের রিপোর্টে অবশ্য সন্তুষ্ট হয়নি পটনা হাই কোর্ট। এই কারণে শেষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সাহায্য চায় আদালত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তদন্তে ফাঁস হয়, ২০১৩সালের ২৬-২৭ জানুয়ারি দীর্ঘ সময় ধরে তিন বিচারকের সেলফোন সুইচ অফ ছিল। পরে ফোন চালু হলে তাঁদের অবস্থান নেপাল সীমান্তের কাছে ফোর্বসগঞ্জ শহরের টাওয়ার চিহ্নিত করে। অর্থাৎ তাঁদের কর্মস্থলের থেকে অনেক দূরে গিয়েছিলেন তিন বিচারক।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রিপোর্টের ভিত্তিতে বিহার সরকারকে অভিযুক্ত তিন বিচারককে অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান তিন অভিযুক্ত। সেই আবেদন খারিজ করে পটনা হাই কোর্টের রায় বহাল রাখে বিচারপচতি ইন্দু মালহোত্রা ও বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ।