দক্ষিণ ২৪ পরগনা কুলতলি ব্লকে ঢুকে পড়েছে বাঘ। তা ঘিরে এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকাবাসীদের মধ্যে।আর সেই বাঘ ধরতে গিয়ে পালটা তাড়া খেলেন বনকর্মী। গর্জন করে লাফিয়ে বনকর্মীর দিকে এগিয়ে আসতে থাকে বাঘ। তা দেখে কোনওভাবে বাঘের মুখ থেকে নিজেকে রক্ষা করেন বনকর্মী। মৈপীঠের বৈকুন্ঠপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্রীকান্ত পল্লি ও কিশোরীমোহনপুর এলাকায় জঙ্গল লাগোয়া গ্রামে সোমবার সকালে বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যায়। আর তারপরে অনুসন্ধান শুরু করতেই বাঘের গর্জন শুনতে পান বনকর্মীরা।
আরও পড়ুন: বাঘের আগমন! রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের টাটকা পায়ের ছাপ, গর্জনে ঘুম উড়ল কুলতলির
জানা গিয়েছে, রয়েল বেঙ্গলের উপস্থিতির টের পেয়েই বনকর্মীরা গ্রাম সুরক্ষিত করতে জাল দিয়ে ঘিরে ফেলছিলেন। সেই কাজ করতে গিয়েই এক বনকর্মীর সামনে পড়ে যায় বাঘ। এরপরে রয়েল বেঙ্গল গর্জন করে বনকর্মীর দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তা দেখে সেখান থেকে পালিয়ে যান বনকর্মী। তার দাবি, বাঘটি ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে ছিল। বাঘের হিংস্রতা দেখে মনে হয়েছে সেটি পুরুষ।
জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে দিকে এলাকায় বাঘের পায়ে ছাপ দেখতে পান এক মৎসজীবী। তিনি জানিয়েছেন, কাঁকড়া ধরতে যাওয়ার সময় পান গ্রাম লাগোয়া ওরিয়েন নালার বাঁধে বাঘের টাটকা পায়ের ছাপ দেখতে পেয়েছিলেন। তা দেখার পর তিনি গ্রামবাসীদের সতর্ক করেন। পরে পুলিশ ও বনকর্মীরা খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছন। পায়ের ছাপটি বাঘের তা নিশ্চিত করার পরেই বন দফতরের তরফে মাইকে করে গ্রামবাসীদের সতর্ক করা হয়। বনকর্মীদের প্রাথমিক অনুমান, ক্ষুধার্ত থাকার কারণে বাঘটি লোকালয়ে চলে এসেছে। যদিও গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, মৃত একটি গবাদি পশুকে নদীর পাড়ে ফেলা হয়েছিল। সম্ভবত সেই টানেই সেটি গ্রামে ঢুকে পড়েছে। খবর পেয়ে বাঘের সন্ধান শুরু করার পরে কয়েক জন বনকর্মী। সঙ্গে ছিলেন গ্রামবাসীরা। তাদের দাবি, তারা বাঘের গর্জন শুনতে পেয়েছেন।
এরপরে গ্রামবাসীদের সুরক্ষিত রাখতে নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় গ্রাম। সেই সময় ওই বনকর্মীর সামনাসামনি চলে আসে বাঘটি। এদিকে, বাঘ যাতে নদী পেরোতে না পারে তার জন্য মশাল এবং টায়ার জ্বালিয়ে রাত পাহারা দেন বনকর্মীরা। বন দফতরের প্রাথমিক অনুমান, মাতলা নদী সংযোগরক্ষাকারী ওরিয়েন নদী পেরিয়ে বাঘটি কিশোরীমোহনপুরে এসে থাকতে পারে। এদিকে, বন দফতরের তরফে ইতিমধ্যেই বাঘ ধরার জন্য খাঁচা পাতার কাজ শুরু হয়েছে।