তেলাঙ্গনার জঙ্গলে বাঘের হানায় মৃত্যুহল ২১ বছরের আদিবাসী তরুণের। ঘটনার জেরে কাওয়াল ব্যাঘ্র প্রকল্প সংলগ্ন জনবসতিতে সতর্কবার্তা প্রচার করল রাজ্য বন দফতর।
বুধবার তেলাঙ্গনার আসিফাবাদ-কুমারম ভীম জেলার অন্তর্গত কাওয়াল অভয়ারণ্যের ব্যাঘ্রপ্রকল্পের অধীনে থাকা বনাঞ্চলে প্রবেশকরেছিল দহেগাঁও ব্লকের দিগিদা গ্রামের বাসিন্দা সিদাম ভিগনেশ। আচমকা তার ঘাড়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে একটি বাঘ। তার পর সিদামকে টানতে টানতে গভীর জঙ্গলে ঢুকে যায় বাঘটি। পরে সন্ধ্যাবেলা তরুণের ছিন্নভিন্ন দেহ জঙ্গল থেকে উদ্ধার করেন সিদামের বন্ধু বলিশেট্টি নবীন ও সিদাম শ্রীকান্ত-সহ অন্যরা।
ঘটনাটি বিরলের মধ্যে বিরমতম বলে জানিয়েছেন বন দফতরের আধিকারিকরা। হিন্দুস্তান টাইমস-কে অফিসার অন স্পেশ্যাল ডিউটি (ওয়াইল্ডলাইফ) এ শংকরণ বলেন, ‘গত ২৫ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতায় আমি অন্তত কোনও বাঘকে মানুষকে হত্যা দূর অস্ত্, আঘাত হানতেও দেখিনি। কী ভাবে এমন হল, ভেবে অবাক লাগছে।’
জানা গিয়েছে, বাঘটি সিদামের দেহের কিছু অংশ খেয়েছে। শংকরণের দাবি, ‘আমাদের জঙ্গলে কোনও মানুষখেকো বাঘ নেই। তাই ঘটনাটি আমাদের হতবাক করেছে। হতে পারে দীর্ঘ দিন কোনও শিকার না পেয়েই মানুষকে আক্রমণ করেছে বাঘটি।’
তাঁর আরও ধারণা, মাটির উপরে উবু হয়ে বসে থাকা সিদামকে অন্য কোনও পশুহিসেবে ভুল করেছে বাঘটি। তিনি জানিয়েছেন, কাওয়াল ব্যাঘ্র প্রকল্পের আওতায় থাকা জঙ্গল ও সংলগ্ন মহারাষ্ট্রের তাড়োবা অভয়ারণ্যে কমপক্ষে চারটি বাঘ রয়েছে। বাঘগুলি ১০ ঘণ্টায় আন্দাজ ১০-১২ কিমি পাড়ি দেয়। এর আগে গ্রামের গবাদি পশুর উপরে বাঘের হানার খবর পাওয়া গিয়েছে। তবে মানুষ মারার ঘটনা এই প্রথম, জানিয়েছেন শংকরণ।
এ দিকে মানুষখেকো বাঘের খবর চাউর হওয়ার পরে স্থানীয় আদিবাসী জনবসতিতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বন দফতর ও পুলিশের তরফে এলাকাজুড়ে সতর্কবার্তা লাগাতার প্রচার করা হচ্ছে।
বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, টোপ ব্যবহার করে দুই জায়গায় ইতিমধ্যে ফাঁদ পাতা হয়েছে। শুক্রবার জঙ্গলের আরও দুই জায়গায় ফাঁদ-সহ খাঁচা পাতা হবে। বন দফতরের দাবি, বাঘ ধরা পড়বেই। তার পর তাকে নিয়ে কী করা যায়, তা জাতীয় ব্যাঘ্র প্রকল্প দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে স্থির করা হবে।
নিহত তরুণের পরিবারকে এককালীন ৫লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে বন দফতর।