বিজেপি নেতৃত্বাধীন ত্রিপুরা সরকারকে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন টিপরা মোথা দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মা। তাঁর সাফ কথা, বিজেপির পক্ষ থেকে তাঁদের যেসমস্ত প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তা যদি রাজ্য় সরকার পূরণ না করে, তাহলে তাঁদের দল সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেবে। এবং পৃথক পথে চলবে।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সাল থেকে বিজেপির সঙ্গে রাজনৈতিক গাঁটছড়া বাঁধে টিপরা মোথা। বয়সে নবীন হলেও ত্রিপুরায় টিপরা মোথার জনভিত্তি যথেষ্ট পোক্ত ও গুরুত্বপূর্ণ বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।
ত্রিপুরা রাজ পরিবারের বর্তমান বংশধর প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মা ২০২১ সালে এই দল নির্মাণ করেন। আত্মপ্রকাশের মাত্র দু'মাসের মধ্য়েই 'ত্রিপুরা আদিবাসী অঞ্চলসমূহ স্বশাসিত জেলা পরিষদ' বা টিটিএএডিসি-র নির্বাচনে অংশ নেয় এই দল এবং জয়লাভ করে।
এর দু'বছর পর - অর্থাৎ - ২০২৩ সালে ত্রিপুরায় বিধানসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই ভোট প্রক্রিয়া দল হিসাবে এককভাবে লড়াই করে টিপরা মোথা এবং ১৩টি আসনে জয়লাভ করে। এই নির্বাচনী সাফল্য টিপরা মোথাকে রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করে দেয়। আর এখন সেই তারাই বিজেপি নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের পাশ থেকে সরে দাঁড়ানোর হুঁশিয়ারি দিচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে ফেসবুকে একটি ভিডিয়ো বার্তা পোস্ট করেছেন প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মা। তিনি বলেন, 'আমি আমার টিপরাসা যোদ্ধাদের উদ্দেশে একটি বিষয় একেবারে স্পষ্ট করে দিতে চাই। সেটা হল - রাজনীতি মোটেও সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ নয়। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল আমাদের জনতা। আপনাদের একটি বিষয় ভালো করে বুঝে নিতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না আমাদের স্থানীয় মানুষকে তাদের অধিকার প্রদান করা হচ্ছে, ততক্ষণ আমাদের সরকারের হাতে থাকা ক্ষমতার মেয়াদ অস্থায়ী।...'
এরপরই রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, 'যদি আমাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করা না হয়, যদি আমরা আমাদের পরিচয়গত নিরাাপত্তা না পাই, আমাদের ভাষা, আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের ভূমি এবং আমাদের ভবিষ্যতের নিশ্চিত নিরাপত্তা না পাই, তাহলে আমাদের ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।'
এই ফেসবুক পোস্টে আরও একটি বিষয় নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেছেন প্রদ্যোৎ। তাঁর অভিযোগ, এবারের সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে নয়াদিল্লির কর্তব্য পথে ত্রিপুরার যে ট্যাবলো পেশ করা হয়েছে, তার মাধ্যমে ত্রিপুরার সংস্কৃতি যথাযথভাবে তুলে ধরা হয়নি।
রাজ্য সরকারের উদ্দেশে প্রদ্যোতের কড়া বার্তা, 'যদি আপনারা সত্যিই আমাদের (ত্রিপুরার) সংস্কৃতি তুলে ধরতে চান, তাহলে সেটা যথাযথভাবে করুন। আপনি যদি অন্যান্য সংস্কৃতির প্রদর্শন করতে চান, তাতে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু, সেটাও সঠিকভাবে করা দরকার।'