পাঁচমাস হয়ে গেল রাজ্য বিধানসভায় সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়ে গিয়েছে 'অপরাজিতা বিল'। কিন্তু, তারপরও এই বিল আইনে উন্নীত বা কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। কারণ, নিয়ম অনুসারে এই বিল আইনে পরিণত করতে হলে তাতে রাষ্ট্রপতির আনুষ্ঠানিক সম্মতি বা স্বাক্ষর প্রয়োজন। কিন্তু, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এখনও পর্যন্ত সেই বিলে স্বাক্ষর করেননি। আর, সেই কারণে আজ (বৃহস্পতিবার - ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কথা বললেন তৃণমূলের সংসদীয় দলের প্রতিনিধিরা।
এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের মোট ১১ জন প্রতিনিধি (সাংসদ) রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এই দলের নেতৃত্বের ছিলেন প্রবীণ সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যা। সঙ্গে ছিলেন - ডেরেক ও'ব্রায়েন, সায়নী ঘোষ, জুন মালিয়া, দোলা সেন, মহুয়া মৈত্র, সুম্মিতা দেব-সহ মোট ১১ জন তৃণমূল সাংসদ (যাঁদের মধ্যে ন'জনই মহিলা)।
উল্লেখ্য, বাংলায় আরজি কর কাণ্ডের পর গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর রাজ্য বিধানসভায় 'অপরাজিতা বিল' পাস হয়। রাজ্য সরকারের দাবি, এই বিল আনার প্রধানতম উদ্দেশ্যে হল - ধর্ষণের মতো গর্হিত ও গুরুতর অপরাধে দোষীকে দ্রুত চিহ্নিত করে, ততোধিক দ্রুততার সঙ্গে তার বিচার করে তাকে ফাঁসিকাঠে ঝোলানো বা আমরণ কারাগারে ঢোকানো।
রাজ্য সরকারের যুক্তি, এই কঠোর আইন প্রণয়ন করা হলে রাজ্যে নারী নিরাপত্তা আরও জোরদার হবে এবং অপরাধ মনস্করাও কঠিন শাস্তির ভয়ে মহিলাদের অসম্মান করার সাহস পাবে না। কিন্তু, সেই বিলে আজ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর না করায় রাজ্যের পক্ষ থেকে একাধিকবার হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি যাতে দ্রুত বিলে স্বাক্ষর করেন, সেই আর্জি জানাতেই এদিন সকালে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা।
এদিনের এই সাক্ষাতের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন তৃণমূল প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাষ্ট্রপতি ধৈর্যের সঙ্গে তৃণমূল প্রতিনিধিদের সমস্ত কথা শুনেছেন। এমনকী, তাঁকে বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন বলেও সুদীপের মনে হয়েছে। দেশের সাংবিধানিক প্রধান গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখারও আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই প্রসঙ্গে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে এদিন বলতে শোনা যায়, সর্বসম্মতিক্রমে গত বছর রাজ্য বিধানসভায় অপরাজিতা বিল পাস হলেও, সেই বিলে অনুমোদন আসছে না। বিলম্ব হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে, রাষ্ট্রপতির কাছে মহিলা সাংসদদের নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলাম। তাঁকে জানিয়েছি, নিশ্চিত মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, দোষী সাব্যস্ত হওয়া ধর্ষকদের এই ধরনের শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে এই বিলের মাধ্যমে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।