অধীর চৌধুরী প্রদেশ কংগ্রেসে এখন কার্যত ক্লোজড চ্যাপ্টার। নিজেও হেরেছেন এবং নেতৃত্বও সাফল্য পায়নি। তাই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং সাংসদ এবং সভাপতি দুটি পদেই তিনি ‘প্রাক্তন’। এই আবহে বাংলায় বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট ভেঙে যেতে পারে বলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। সেক্ষেত্রে কংগ্রেস–তৃণমূল কাছাকাছি আসতে পারে বাংলায়। কেন্দ্রে বিজেপিকে হটাতে বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’কে ঐক্যবদ্ধ রাখতে তৃণমূল কংগ্রেস সক্রিয় থাকবে। আর সর্বভারতীয় স্তরে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক ভাল। সেক্ষেত্রে বাংলা নিয়ে নতুন করে আলোচনায় বসতে আপত্তি নেই। আজ, বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে চা চক্রে এই কথা জানান তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন বাংলায় কংগ্রেস ১টি আসন পেয়েছে। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধী তিন দলকে হারিয়ে ২৯টি আসন জিতেছে। এখন প্রদেশ সভাপতির পদ থেকে অধীর চৌধুরী বিদায় নিয়েছে। এই আবহে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কংগ্রেস যদি তৃণমূলের সঙ্গে নতুন করে আলোচনায় বসতে চায় তাতেও আপত্তি নেই। ত্রিপুরা কিংবা গোয়ায় আমরা এমন জায়গায় দলের সম্প্রসারণ করতে গিয়েছি যেখানে বিজেপি শক্তিশালী। কংগ্রেস নয়। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহুদিন আগেই সূত্র দিয়েছিলেন, যে বিরোধী দল যে রাজ্যে শক্তিশালী সেখানে তার পিছনে দাঁড়াক অন্যান্য বিরোধী দল। আমরা কোনও রাজ্যে গিয়ে কংগ্রেসকে দুর্বল করার কথা ভাবিনি। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে আমাদের জোট প্রস্তাব কংগ্রেসের মানা উচিত ছিল।’
আরও পড়ুন: ‘কেন্দ্র আগাম কোনও সতর্কবার্তা পাঠায়নি’, অমিত শাহেব দাবি খারিজ করলেন পিনারাই বিজয়ন
এখন যদি কংগ্রেসের সঙ্গে বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের জোট হয় তাহলে বিজেপি অস্তিত্ব সংকটে পড়ে যাবে। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কেন্দ্রে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সবচেয়ে বড় শরিক কংগ্রেস। আর রাহুল গান্ধীর সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক ভাল। সেক্ষেত্রে বাংলায় জোট হলে সুদূরপ্রসারি প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। এই বিষয়ে অভিষেকের বক্তব্য, ‘অন্য সব জোট শরিকরা কোনও না কোনও রাজ্যে কংগ্রেসের শরিক। একমাত্র আমরা কংগ্রেস, বিজেপি এবং বামেদের সঙ্গেই লড়াই করেছি। কংগ্রেসকে বারবার জোটের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। রাজনৈতিক বাস্তবতা মেনে দুটি আসন দেওয়ারও প্রস্তাব দিয়েছি। কংগ্রেস সেটা করেনি। তবে কেন্দ্রে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে বিজেপিকে হারাতে লড়াই করব।’
একদিন আগেই এআইসিসি’র পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত নেতা গুলাম আহমেদ মীর বঙ্গ কংগ্রেসের নেতাদের বলেছেন, অধীর চৌধুরী এখন ‘প্রাক্তন’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। তিনি পদত্যাগ করেছেন। নতুন সভাপতি বাছাইয়ের কাজ চলছে। আর অধীরবাবুর কথায়, দিল্লি এসে তিনি জানতে পেরেছেন যে তাঁকে প্রাক্তন করা হয়েছে। এখন কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের বোঝাপড়া হওয়ার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এখন বাধা দিতে পারবেন না অধীর। তাই এখন তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ককে নতুন করে গড়ে তোলার কথা ভাবা যেতে পারে বলে মনে করছে কংগ্রেস।