বাংলাকে বঞ্চনার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে করে আসছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক ও সাংসদরা। একশো দিনের কাজের টাকা এবং আবাস যোজনার টাকা দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। এই নিয়ে লোকসভা নির্বাচনের আগে নয়াদিল্লির বুকে বড় আন্দোলন সংগঠিত করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীও ধরনা থেকে শুরু করে সুর চড়ান নীতি আয়োগের বৈঠকে। গত ১০ মার্চ ব্রিগেডের জনগর্জন সভা থেকে কেন্দ্রের মোদী সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর আজ মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে দাঁড়িয়ে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে জাতীয় রাজনীতিতে।
আজ, মঙ্গলবার সংসদের বাইরে বাংলাকে বঞ্চনার প্রসঙ্গ টেনেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণকে বিঁধলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারের কেন্দ্রীয় বাজেটেও বাংলাকে তেমন কিছু দেওয়া হয়নি। বাংলা আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়ছে বলে নির্মলা সীতারামনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তোপ দেগে বলেন, ‘মুখে মিথ্যে কথা না বলে পরিসংখ্যান দেখান। ১০০ দিনের প্রকল্প এবং আবাস যোজনায় ২০২১ সালে হারার পর থেকে কেন্দ্র বাংলাকে ১০ পয়সাও দিয়েছে দেখাক। আমি এবং বিজেপির মন্ত্রীরা ভুল বলতে পারি। কাগজ তো কখনও মিথ্যে বলবে না। তাই শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে বলছি।’
এদিকে বাজেট পেশ হয়েছে ১০০ মিনিট হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ১০০টি মিথ্যে দাবি করেছেন। কিন্তু বাংলাকে বঞ্চনার কথা বলতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি বলে তোপ দাগেন অভিষেক। সংসদের বাইরে এসে সাংবাদিকদের অভিষেক বলেন, ‘আমি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছিলাম, ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় নির্লজ্জভাবে বিজেপি হেরে যাওয়ার পর কেন্দ্রের সরকার ক’পয়সা বা টাকা বরাদ্দ করেছে সে ব্যাপারে একটা শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন। উনি সেটা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। উল্টে বাংলার নামে কুৎসা করছেন। তবু বলব বিজেপির যদি সৎ সাহস থাকে তাহলে বাংলার জন্য ওরা কত বরাদ্দ করেছে তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করে দেখাক।’
আরও পড়ুন: মেয়রের ছবি ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপ, চাওয়া হচ্ছে টাকা, আলোড়ন শিলিগুড়িতে
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকার বকেয়া টাকা না দেওয়ায় ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা শ্রমিকদের মিটিয়ে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সেটাই আজ তুলে ধরে অভিষেকের বক্তব্য, ‘তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপির মতো দ্বিচারিতার রাজনীতি করে না। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়িতে আমরা ভোট পাইনি। কিন্তু ওখানকার গ্রামে গিয়ে একজন মহিলা খুঁজে বের করুন তো যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাননি। কাঁথি কিংবা পুরুলিয়া একটা মহিলা বের করুন তো যে তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দেয়নি বললে কন্যাশ্রী পাইনি। এই দ্বিচারিতার রাজনীতি আমরা করি না। ওরা বিভ্রান্ত করছে। গত দেড় বছরে আবাস যোজনার টাকা ১১.৩৬ লক্ষ মানুষ বাড়ি পাননি।’