একইদিনে জোড়া সিদ্ধান্ত নিল তৃণমূল কংগ্রেস। একদিকে গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইনজো ফেলেইরো–কে রাজ্যসভায় পাঠাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে এখানের বিধানসভা নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হল। একুশের নির্বাচনে তাঁর ঝোড়ো প্রচার দেখেছে বাংলা তথা ভারত। আবার লোকসভায় তাঁর ঝাঁঝালো বক্তব্যের সামনে দাঁড়াতে পারেননি গেরুয়া শিবিরের অনেক রথী–মহারথীরা। ইংরেজি, বাংলা এবং হিন্দি ভাষায় সাবলীল মহুয়া। তাই গোয়ার মতো রাজ্যে এমন সুবক্তার উপরই ভরসা করছে দল।
সম্প্রতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, আর তিন মাস অপেক্ষা করুন। গোয়ায় ক্ষমতায় আসবে তৃণমূল কংগ্রেস। আজকের তারিখটা লিখে রাখুন। এই কথা যে শুধু কথার কথা ছিল না সেটা এই সিদ্ধান্তগুলি থেকে স্পষ্ট হচ্ছে। এখন দুই রাজ্য—ত্রিপুরা এবং গোয়া মূল টার্গেট তৃণমূল কংগ্রেসের। তাই জাল গোটানো শুরু হয়ে গিয়েছে। এই বিষয়ে মহুয়া মৈত্র সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এই রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের ভাল ফল করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আমি সেই চ্যালেঞ্জ নিচ্ছি। দু’এক দিনের মধ্যেই গোয়ায় যাব। আর সেখানেই থাকব।’
সম্প্রতি গোয়ায় একটি টিম পাঠিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সেখানে গিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই মতো সেখানে সংগঠন সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। রাজ্যসভা এবং লোকসভার দুই সাংসদ সেখানে কাজ করলে ফসল ঘরে উঠবেই বলে মনে করছে ঘাসফুল শিবির। গত অক্টোবর মাসেই গোয়ায় গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোঙ্কন উপকূলে পা রেখেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন সেখানের সমস্যা। তাই নিজেই এই দুই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছেন।
এই গোয়াতেই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন প্রাক্তন টেনিস তারকা লিয়েন্ডার পেজ এবং নাফিসা আলি। এখানে এখন বিজেপি সরকার। তবে এই সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের বিস্তর ক্ষোভ রয়েছে। এই বিষয়ে মহুয়া বলেন, ‘ছোট রাজ্য গোয়া। এখানে বহুত্ববাদী সংস্কৃতি রয়েছে। মুক্ত চিন্তার মানুষ রয়েছেন। তাঁদের উন্নয়নের স্বার্থেই আমাদের লড়াই।’
উল্লেখ্য, রাজ্যে চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে শান্তিপুরের দায়িত্বে ছিলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। এপ্রিল মাসের বিধানসভা নির্বাচনে সেখানে ১৬ হাজার ভোটে জিতেছিল বিজেপি। কিন্তু মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে পাশা উলটে দেন মহুয়া। তাঁর ধারাবাহিক প্রচার এবং সংগঠনকে শক্তিশালী করার দৌলতে সেখানে ৬৪,৬৭৫ ভোটে জিতছেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী। তাই বাড়তি দায়িত্ব বলে মনে করা হচ্ছে।