বিজেপি সরকার আসছে। তাই শেয়ার বাজার উর্দ্ধগামী। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার আগে এমন ঘটনা সামনে এসেছিল। কারণ এক্সিট পোলে বলে দেওয়া হয়েছিল, বাংলায় এবং গোটা দেশে বিজেপি দারুণ ফল করতে চলেছে। তারপরই শেয়ার মার্কেটে ভোটের খেলা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেখানে এই বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থা সেবি–কে অভিযোগ জানানো হলেও তেমন কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। তাই এবার সেবি’র বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করার হুঁশিয়ারি দিল তৃণমূল কংগ্রেস।
লোকসভা নির্বাচন শেষ হতেই বুথফেরত সমীক্ষা শুরু হয়ে যায়। তাতে বিজেপির জয় নিয়ে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানো হয়। যদিও ওই বুথফেরত সমীক্ষার সঙ্গে বাস্তবের মিল দেখা যায়নি। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অধরা থেকে গিয়েছে বিজেপির। নয়াদিল্লিতে এবার এনডিএ’র শরিকদের সমর্থনে সরকার গড়েছে বিজেপি। তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেছেন নরেন্দ্র মোদী। বাংলা থেকে দু’জন প্রতিমন্ত্রী হয়েছে। বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার আর বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। এই গোটা ঘটনা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলে বলেন, ‘সেবি আমাদের এখনও কোনও লিখিত জবাব দেয়নি। শুধু মৌখিক আশ্বাস দিয়েছে। এই বিষয়টা আমরা সংসদে তুলব। আর প্রয়োজনে আমরা এটা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাব। যদি দোষ প্রমাণ হয় আমরা প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইব।’
আরও পড়ুন: ‘আগুন বইকে পোড়াতে পারে, জ্ঞানকে নয়’, নালন্দার নয়া ক্যাম্পাস উদ্বোধন করে মন্তব্য মোদীর
এদিকে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হতেই দেখা যায়, ২৪০ আসনে আটকে গিয়েছে বিজেপি। সেখানে ইন্ডিয়া জোট ২৩৫ আসন জিতে চাপে ফেলে দিয়েছে বিজেপি তথা এনডিএ সরকারকে। বাংলাতে তো দাঁড়াতে দেয়নি বিজেপিকে তৃণমূল কংগ্রেস। তাঁদের ৬টা আসন কমে গিয়েছে। আর তৃণমূল কংগ্রেসের ৭টি আসন বৃদ্ধি পেয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সাকেত গোখলের বক্তব্য, ‘বুথফেরত সমীক্ষায় হাস্যকর ফলাফল দেখানো হয়েছিল। আর তার জেরেই শেয়ার মার্কেট অস্বাভাবিকভাবে উঠেছিল। কিন্তু মোদী যখন বারাণসীতে দীর্ঘক্ষণ পিছিয়ে ছিলেন তখন বিনিয়োগকারীরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। ৩০ লক্ষ কোটি টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছেন তাঁরা। শেয়ার মার্কেটকে এভাবে প্রভাবিত করা হয়েছিল।’
অন্যদিকে ৪০০ পারের স্বপ্ন বিজেপির কাছে অধরাই থেকে যায়। লোকসভা নির্বাচনের আগে তামাম বিরোধী দলের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এজেন্সি নামিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বাংলায় সবচেয়ে বেশি দাপট দেখিয়েছে ইডি–সিবিআই–এনআইএ এবং আয়কর বিভাগ। অন্যান্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের গ্রেফতার পর্যন্ত করা হয়েছিল। সাকেত গোখলের কথায়, ‘সাধারণ মানুষ ৩০ লক্ষ কোটি টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছেন মানে কেউ ৩০ লক্ষ কোটি টাকা লাভ করেছে। তারা কারা? সেবি’র তদন্ত করা উচিত। যে সংস্থাগুলি লাভবান হয়েছে, সেই সংস্থাগুলিতে বিজেপির কোনও নেতার বিনিয়োগ আছে কি না সেটা তদন্ত হওয়া উচিত। সাধারণ মানুষের টাকা গিয়েছে হাতে গোনা কয়েকটি শিল্প সংস্থার হাতে। সেবি’র কাছে সেসব আমরা জানতে চেয়েছি। বারবার চিঠি দিয়েছি। কিন্তু তা সত্ত্বেও তদন্ত করছে না।’