একুশের নির্বাচনে জয়ের পরই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। শুধু অপেক্ষা ছিল যোগ্য লোকের হাতে দায়িত্বটা তুলে দেওয়া। হলও তাই। হ্যাট্রিক করে বাংলার কুর্সিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বসতেই বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে তৃণমূল কংগ্রেস বিস্তারের পরিকল্পনা করা হয়। তার কিছুদিনের মধ্যেই যোগ্য লোক হিসাবে তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরলেন মুকুল রায়। তারপরই লক্ষ্য দিল্লি বিজয়। আর তাই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একাধিক রাজ্যে শক্তি বৃদ্ধি করার পথে এগোচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। মুকুল রায়কে কাজে লাগিয়েই ভিনরাজ্যে সংগঠন বিস্তার করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। এখন প্রথম টার্গেট হল ত্রিপুরা। বিপ্লব দেব শাসিত এই রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস অনেক আগেই প্রবেশ করেছিল। এমনকী এখানে আগে কাজ করে গিয়েছেন মুকুল রায়ও। তাঁর নেতৃত্বেই ত্রিপুরাতে তৃণমূল কংগ্রেসের ৬ জন বিধায়ক ছিল। এবার ফের খেলা শুরু হতে চলেছে ত্রিপুরায়। নেতৃত্বে সেই মুকুল রায়।
আসলে একেকটি রাজ্য থেকে লোকসভায় বেশকিছু আসন নিতে না পারলে নরেন্দ্র মোদীকে ধাক্কা দেওয়া যাবে না। তাই এখন থেকেই বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে সংগঠন তৈরি করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস বলে খবর। পাশাপাশি অন্যান্য বিজেপি বিরোধী রাজ্যে হাত দিতে চাইছে না তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ সেখানে তাঁরা যদি লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল করে তাহলে জোট গড়লে ধরাশায়ী হবে মোদী–শাহের রথ। বরং তাঁদের সমর্থন করবে তৃণমূল কংগ্রেস। নির্বাচনে সহায়তাও করবে। এই গোটা বিষয়টির নেতৃত্বে থাকবেন চারজন। মুকুল রায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। এই চার মূর্তির রণকৌশলেই বাজিমাত করা হবে বলে সূত্রের খবর।
এদিকে বাঙালি অধ্যুষিত রাজ্য অসম এবং ত্রিপুরার দিকে টার্গেট করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই ত্রিপুরায় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে নিয়ে আসা হয়েছে নতুন গান। গানটি হল—‘ত্রিপুরা কইতাসে, মমতাদি আইতাসে।’ ইতিমধ্যেই তা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সেখানকার চায়ের দোকান থেকে বাজারহাটে কান পাতলেই এই গানের কলি কানে আসছে। ইতিমধ্যেই টুইটারে ট্রেন্ডিং—ইন্ডিয়া ওয়ান্টস মমতাদি দেখেছেন নেটাগরিকরা। সুতরাং জোর খেলা হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
এই গানটি সোশ্যাল মিডিয়াতেও ঝড় তুলেছে। ত্রিপুরার বহু মানুষ এই গানটি নিজেদের প্রোফাইলে শেয়ারও করছেন। এখান থেকে স্পষ্ট, ত্রিপুরায় তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ মমতাই। এই গানে খাদ্যসাথী থেকে স্বাস্থ্যসাথী, কন্যাশ্রী থেকে শুরু করে যুবশ্রী, বাংলার সফল প্রকল্পগুলির কথা তুলে ধরা হয়েছে। মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরতেই ত্রিপুরাতেও ভাঙন ধরার আশঙ্কা বিজেপিতে। সূত্রের খবর, বিজেপি ছাড়তে পারেন মুকুল ঘনিষ্ঠ সুদীপ রায় বর্মন। এমনকী তাঁর ঘনিষ্ঠ বিজেপি বিধায়করাও দল ছাড়তে পারেন বলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। সুদীপ বাবুর সঙ্গে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের সংঘাত সুবিদিত। অথচ সুদীপ বাবুর কাঁধে ভর দিয়েই ত্রিপুরা জয় সহজ হয়েছিল বিজেপির।