তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় প্যানেল থেকে সরিয়ে অন্য প্যানেলে স্থানান্তরিত করা হোক। মহুয়ার দলের তরফ থেকেই এই আবেদন জানিয়ে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় প্যানেলের নেতৃত্বে রয়েছেন বিজেপি নেতা নিশিকান্ত দুবে। যাঁর সঙ্গে মহুয়া মৈত্রের বিবাদ কারও অজানা নয়। মনে করা হচ্ছে, দুই সাংসদের মধ্যেকার এই তুমুল দ্বন্দ্বের জেরেই তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব এই পদক্ষেপ করেছে।
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই আরও একজন সাংসদ নিশিকান্ত দুবের নেতৃত্বাধীন প্যানেল থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। বদলে তাঁকে নতুন করে শ্রম বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে।
কমিটি বদল করা এই সাংসদ হলেন, সমাজবাদী পার্টির প্রবীণ নেত্রী তথা রাজ্যসভার সদস্য জয়া বচ্চন। তাঁর জায়গায় যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় প্যানেলে যোগ দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার সাংসদ সাকেত গোখলে। এই রদবদলকে বিরোধী জোটের রাজনৈতিক রণকৌশল হিসাবেই দেখছে ওয়াকিবহাল মহল।
নিশিকান্ত দুবে এবং মহুয়া মৈত্রকে ইতিমধ্যেই পরস্পরের চরম বিরোধী হিসাবে দেখা গিয়েছে।
২০২৩ সালে মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন তোলার অভিযোগ এনেছিলেন নিশিকান্ত দুবে। যার জেরে দ্বিতীয় মোদী সরকারের সময়কালে, গত বছরের ৮ ডিসেম্বর সাংসদ পদ খোয়াতে হয় মহুয়াকে। তাঁকে তাঁর পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
সংসদের অন্দরে যে সাংসদদের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সবথেকে বেশি সুর চড়াতে দেখা যায়, মহুয়া মৈত্র তাঁদের মধ্যে অন্যতম। ২০২৩ সালের ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি পালটা নিশিকান্ত দুবের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
এই প্রেক্ষাপটে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় প্যানেল থেকে মহুয়াকে যাতে অন্য প্যানেলে পাঠানো হয়, সেই বিষয়ে দলের তরফে যে অধ্যক্ষকে লিখিত আবেদন করা হয়েছে, তা স্বীকার করেছেন লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
সুদীপ বলেন, 'আমি লোকসভার স্পিকারকে অনুরোধ করেছি, যাতে তিনি মহুয়াকে বৈদেশিক বিষয় সংক্রান্ত সংসদীয় প্যানেলে বদলি করে দেন। কারণ, ওই প্যানেলে একটি জায়গা খালি রয়েছে। আমি গত সপ্তাহেই অধ্যক্ষকে লিখিতভাবে এই আবেদন জানিয়েছি।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপির এক নেতা এই প্রসঙ্গে বলেন, মহুয়া ইস্যুতে তৃণমূল কংগ্রেসের এই পদক্ষেপ নাকি আদতে নিশিকান্ত দুবেরই নৈতিক জয়! যদিও, লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেননি বলেই শোনা যাচ্ছে।
অন্যদিকে, মহুয়া ও নিশিকান্ত, কেউই এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।