পূর্ব লাদাখে সীমান্ত দ্বন্দ্ব মেটানোর জন্য চিনের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা চলছে। কিন্তু আদৌও তা কতটা সফল হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন খোদ প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।
শুক্রবার প্যাংগং সো লেকের কাছে লুকুং ফরোয়ার্ড পোস্ট জওয়ানদের উদ্দেশে ভাষণে রাজনাথ বলেন, ‘সীমান্ত দ্বন্দ্ব মেটানোর জন্য চিনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এখনও পর্যন্ত যা কথা হয়েছে, তাতে পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু সেই সমস্যা কতটা মিটবে, সে বিষয়ে আমি গ্যারান্টি দিতে পারব না।’ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সেই মন্তব্যের পর একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তাহলে এতগুলি বৈঠকে কি তেমন কোনও সমাধানসূত্র বেরোয়নি? চিনা সেনা কিছুটা পিছিয়ে গেলেও বেজিংয়ের মনোভাব নিয়ে কি ধন্দে রয়েছে নয়াদিল্লি?
সেইসব ধন্দের মধ্যেই প্রতিরক্ষামন্ত্রী আশ্বাস দেন, ভারতীয় ভূখণ্ডের এক ইঞ্চি দখল করতে পারবে না চিন (অবশ্যই চিনের নাম মুখে আনেননি তিনি)। রাজনাথ বলেন, ‘আমি অবশ্যই এই আশ্বাস দিতে চাই যে ভারতের এক ইঞ্চি জমিও দুনিয়ার কোনও শক্তি ছিনিয়ে নিতে পারবে না। তাতে কেউ জবরদখল করতে পারবে না।’
সেই কাজটাই কোনও দেশ করতে এলে যোগ্য জবাব দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন রাজনাথ। একইসঙ্গে ঘুরিয়ে নেপালকেও বার্তা দেন। তিনি বলেন, ‘ভারতই হল বিশ্বের একমাত্র দেশ, যে দেশে সারাবিশ্বে শান্তির বার্তা দিয়েছে। আমরা কখনও অন্য দেশে অনুপ্রবেশ করিনি বা অন্য দেশের জমি হাতিয়ে নিইনি। ভারত সর্বদা বাসুদেব কুটুম্বকামের বার্তা দিয়েছে। আমরা অশান্তি চাই না, আমরা শান্তি চাই। ভারতের বরাবরের স্বভাব যে আমরা কোনও দেশের জাত্যাভিমানের উপর আঘাত হানার চেষ্টাও করি না। আর ভারতের জাত্যাভিমানের উপর আঘাত হানার চেষ্টা করলে কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না এবং যোগ্য জবাব দেওয়া হবে।’
শুক্রবার সকালেই লেহ'তে পৌঁছেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। সেখানে প্রথমে স্ট্যাকনা ফরোয়ার্ড পোস্টে যান। পরে লুকুং পোস্টে গিয়ে জওয়ানদের সঙ্গে আলাপচারিতা সারেন। পরে ভারতীয় সেনার প্রতি গর্ব প্রকাশ করে রাজনাথ বলেন, ‘সম্প্রতি প্যাট্রলিং পয়েন্ট ১৪-য় ভারতীয় এবং চিনা সেনার মধ্যে কী হয়েছে, কীভাবে আমাদের কয়েকজন আধিকারিক সীমান্ত রক্ষা করতে গিয়ে জীবন উৎসর্গ করেছেন। আপনাদের সকলের সঙ্গ দেখা করতে পেরে আমি খুশি। কিন্তু তাঁদের হারিয়ে শোকাহত। তাঁদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করছি আমি।’