বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে নৃসিংহ চতুর্দশী পালিত হয়। পুরাণ অনুযায়ী, এই তিথিতে ভগবান বিষ্ণু নৃসিংহ অবতারে দৈত্যরাজ হিরণ্যকশিপুকে বধ করেছিলেন। ইনি বিষ্ণুর চতুর্থ অবতার। এ বছর মে মাসের ৬ তারিখ, অর্থাৎ আজ এই ব্রত পালিত হবে। এ দিন ভগবান নৃসিংহদেবকে প্রসন্ন করার জন্য উপোস করে তাঁর পুজো করা হয়।
ভগবান নৃসিংহের পুজোয় চন্দনের ব্যবহার বিশেষরূপে করা হয়। পদ্মপুরাণ অনুযায়ী ভগবান বিষ্ণুর এই রুদ্র রূপের পুজো করলে পাপমুক্তি হয়।
ব্রত ও পুজো বিধি
এ দিন সকালে জলে গঙ্গাজল মিশিয়ে বৈদিক মন্ত্র সহযোগে মাটি, গোবর, আমলকি এবং তিল নিয়ে পাপের শান্তির জন্য স্নান করা উচিত। এরপর সমস্ত ঘরে গঙ্গাজল ছিটিয়ে বিষ্ণুর নরসিংহ অবতারের পুজো করতে হয়।
পুজোর আগে পুরোদিন উপোস থাকতে হয় এবং শ্রদ্ধা ও সামর্থ অনুযায়ী দানের সংকল্প নিতে হয়। উপোস থাকাকালিন সারাদিন রাগ করবেন না এবং নিদ্রা যাবেন না। দিনে একবারই অন্ন গ্রহণ করবেন। সন্ধে নাগাদ সূর্যাস্তের আগে স্নান করে নৃসিংহের পুজো এবং অভিষেক করে প্রসাদ বিতরণ করতে হয়।
পুজো বিধি
* সন্ধের সময় পুজো বেদীতে চাল রেখে তার ওপর ঘট স্থাপন করুন।
* ঘট অথবা তার পাশে নৃসিংহের মূর্তি বা ছবি রাখুন।
* পঞ্চামৃত, দুধ এবং গঙ্গা জল দিয়ে ভগবান নৃসিংহের অভিষেক করুন।
* এরপর চন্দনের প্রলেপ লাগান। ইনি বিষ্ণুর রুদ্ররূপের অবতার, তাই তাঁর রাগ কমানোর জন্য তাঁকে চন্দনের প্রলেপ লাগানো হয়। চন্দন শীতলতা প্রদান করে। এর ব্যবহার ছাড়া পুজো অসম্পূর্ণ মনে করা হয়।
* কর্পূর, তুলসী পাতা ও অন্যান্য সমস্ত সামগ্রী অর্পণ করুন।
* এরপর ধুপ-ধুনো দেখিয়ে নৈবেদ্য দিন ও আরতি করুন।
* প্রসাদ বিতরণের পর নিজে প্রসাদ গ্রহণ করুন।
পুজোর গুরুত্ব
পদ্মপুরাণ এবং অন্য ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী, নৃসিংহের আরাধনা করলে সমস্ত রকম ইচ্ছাপূরণ হয়। সেই সঙ্গে রোগমুক্তি হয় এবং শত্রু পরাজিত হয়। পুরাণ অনুযায়ী এ দিন দান এবং পুজো করলে মোক্ষপ্রাপ্তিও হতে পারে।