লালগড় আন্দোলনে জড়িত শীর্ষ মাওবাদী নেতা প্রশান্ত বসু ওরফে কিষাণদা ও তাঁর স্ত্রীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হল ঝাড়খণ্ড পুলিশ। এই মাওবাদীর স্ত্রীর নাম শিলা মারান্ডি। একসঙ্গে শুক্রবার তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। লালগড় আন্দোলনে যে ইস্টার্ন রিজিওনাল ব্যুরো কাজ করেছিল তার মাথা ছিল এই মাওবাদী নেতা প্রশান্ত বসু। তাঁকে সবাই কিষাণদা বলেই ডাকে।
জানা গিয়েছে, এই মাওবাদী নেতার ধরার জন্য বহুদিন ধরেই নানা পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু কোনও ছকই কাজে লাগেনি। বারবার পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালাতে সক্ষম হয়েছিল প্রশান্ত। এবার তাঁকে সস্ত্রীক গ্রেফতার করে ঝাড়খণ্ড পুলিশ। এই মাওবাদী নেতাকে ধরতে পুরষ্কার ঘোষণা করেছিল অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশার পুলিশ প্রশাসন। এমনকী ৫০ লক্ষ টাকার পুরষ্কার ঘোষণা করেছিল মহারাষ্ট্র–ছত্তিশগড়। আর ঝাড়খণ্ড পুলিশ কিষাণদার মাথার দাম রেখেছিল ১ কোটি টাকা।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রশান্ত বসু ওরফে কিষাণদা যেখানে আত্মগোপন করেছিল সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় শুক্রবার। লালগড় আন্দোলনে জড়িত ছিল সে। তাকে গ্রেফতার করে ঝাড়খণ্ড পুলিশের সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন কিষাণদার স্ত্রী শিলা মারান্ডিও। এক জায়গায় তিনদিনের বেশি সে থাকত না। অনেক অপারেশনের সঙ্গে সে জড়িত।
কে এই প্রশান্ত বসু ওরফে কিষাণদা? ঝাড়খণ্ড পুলিশের স্পেশাল অপারেশন টিম সূত্রে খবর, প্রশান্ত বসু নকশাল আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এমসিসি’র সর্বভারতীয় সম্পাদক ছিলেন। ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যখন সিপিআই (মাওবাদী) তৈরি হয় তখন নতুন দলের দলিল তৈরি করেন এই কিষাণদা। ইস্টার্ন জোনের দায়িত্বে ছিলেন। আর আজ, গ্রেফতার হওয়ার আগে মাওবাদীদের ইস্টার্ন রিজিওনাল ব্যুরোর দায়িত্বে ছিলেন প্রশান্ত বসু ওরফে কিষাণদা।
তাঁর স্ত্রী শিলা মারান্ডি ১৫ বছর আগে গ্রেফতার হন। ৬ বছর জেলে ছিলেন। এখন এই মাওবাদী নেতার বয়স ৭৫। ইদানিং তাঁর নেতৃত্বে ঝাড়খণ্ড অঞ্চলে মাওবাদী কার্যকলাপ তুঙ্গে উঠেছিল। তাই তাঁকে ধরতে নানা পরিকল্পনা এবং পুরষ্কার ঘোষণা করা হয়। আর তাঁকে জেরা করেই আগামীদিনে মাওবাদীদের রণকৌশল জানা যাবে বলে মনে করছে পুলিশ।