মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক ভয়াবহ টর্নেডোর তাণ্ডবে কমপক্ষে ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এই ঝড়ের প্রকোপে সে দেশের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিজৌরি, আর্কানসাস, টেক্সাস এবং ওকলাহোমা। এরমধ্যে মিজৌরিতে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে, যেখানে অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, টর্নেডোর জেরে কানসাসে ভয়াবহ এক পথ দুর্ঘটনায় আরও ৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ৫০টিরও বেশি গাড়ি একসঙ্গে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। (আরও পড়ুন: রহস্যজনক ভাবে পাকিস্তানে খতম একের পর এক ভারত বিরোধী জঙ্গি, একনজর দীর্ঘ তালিকা)
ভয়াবহ পরিস্থিতির বর্ণনা দিতে গিয়ে মিজৌরির বাটলার কাউন্টির কোরোনার জিম একার্স বলেন, 'ওই জায়গাটি আর চেনার উপায় ছিল না। শুধু ধ্বংসস্তূপ পড়ে ছিল। মেঝেটাও উল্টো হয়ে গিয়েছিল, আমরা হাঁটছিলাম দেয়ালের ওপর।' এদিকে, আবহাওয়া আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।এই পরিস্থিতিতে আর্কানসাস ও জর্জিয়ার গভর্নররা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। আর্কানসাসের গভর্নর সারাহ হাকাবি ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য ২.৫ লাখ ডলার বরাদ্দ দিয়েছেন। ওকলাহোমার গভর্নর কেভিন স্টিট জানিয়েছেন, রাজ্যটিতে টর্নেডো ও আগুনে ৬৮৯ বর্গকিলোমিটার এলাকা পুড়ে গিয়েছে। এছাড়া, অন্তত ৩০০টি বাড়ি ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দমকা হাওয়ার কারণে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় বিভিন্ন এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। (আরও পড়ুন: ভারতীয় ডক্টরেট ছাত্রীর ভিসা বাতিল করায় ট্রাম্পের প্রশংসায় তথাগত রায়! বললেন...)
টর্নেডোর তাণ্ডবে মাটিতে মিশে গিয়েছে একাধিক বাড়ি। উপড়ে গিয়েছে প্রচুর গাছ। ওয়েন কাউন্টিতে ঝড়ের তাণ্ডবে টুকরো টুকরো হয়ে মাটিতে মিশে গিয়েছে একটি বাড়ি। সেখানে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ৫টি মৃতদেহ উদ্ধার করেন উদ্ধারকারীরা। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আরকানসাস প্রদেশেও। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সাহায্যার্থে এমার্জেন্সি রেসপন্স টিম মোতায়েন করেছেন গভর্নর সারা হুকাবি। অন্যদিকে, টেক্সাস প্রদেশে ধুলোঝড়ের ফলে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩ জন।
আরও পড়ুন: 'দেশ বিরোধী চক্রান্তের অভিযোগ', বাংলাদেশে গ্রেফতার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মহাসচিব
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত। ঘণ্টায় ৮০ মাইল বেগে দমকা হাওয়ায় তছনছ হয়ে গিয়েছে এলাকা। এদিকে, ক্রমশ পূর্বদিকে এগোচ্ছে টর্নেডো। যার জেরে আরও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছে প্রশাসন। দমকা হাওয়ার সঙ্গে শিলাবৃষ্টিরও পূর্বাভাস জানিয়েছে ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস। লুসিয়ানা থেকে ফ্লোরিডার উপর দিয়ে ঝড়ের তাণ্ডব যেতে পারে বলে সতর্কতা আবহাওয়া দফতরের। টর্নেডোর জেরে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন বিস্তীর্ণ এলাকা। চারিদিকে শুধুই ক্ষয়ক্ষতি ও ধ্বংসাবশেষ। বিপদের সম্মুখীন লক্ষ লক্ষ মার্কিনবাসী। এখনও আরও বেশ কয়েকটি টর্নেডো আসার পূর্বাভাস রয়েছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, প্রশাসন ব্যবস্থা নিলেও মিসৌরির অবস্থা দেখে আতঙ্কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাংশ।