চলতি বছরের জুন মাসে শিশুদের করোনার টিকাকরণের ট্রায়াল প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। সোমবার এমনই জানিয়ে দিল ভারত বায়োটেক। দেশে ১৮ বছরের বেশি বয়সিদের ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। এবার শিশুদের উপর ভ্যাকসিন ট্রায়াল প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে ভারত বায়োটেক।
করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ থেকে বাঁচতে ইতিমধ্যে বিশ্বের অনেক দেশই শিশুদের টিকাদানের প্রক্রিয়া শুরু দিয়েছে। ভারত বায়োটেকের প্রধান ডক্টর রাচেস এল্লা জানান, ‘গত বছর থেকেই আমরা টিকা উৎপাদনের ওপর নজর দিয়েছিলাম। এখন আমাদের প্রধান লক্ষ্য হল উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। আগামী জুন মাস থেকেই কোভ্যাক্সিনের শিশুদের ট্রায়াল শুরু হতে পারে।’ একইসঙ্গে তিনি জানান, শিশুদের পাশাপাশি গর্ভবতী ও যে সব মায়েরা স্তন্যপান করাচ্ছেন, তাঁদের জন্য আলাদা ট্রায়াল প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। তাতে যদি কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না দেখা দেয়, তাহলে সকলকেই টিকা দেওয়া হবে। পাশাপাশি সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের শেষের দিকে ভারত বায়োটেকের ভ্যাকসিনের উৎপাদনের পরিমাণ ৭০ কোটিতে পৌঁছে যাবে।
ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে সংস্থার প্রধান জানান,‘আমাদের পরিশ্রমের ফল মিলেছে।ভ্যাকসিনটি করোনা সংক্রমণ রুখতে সাহায্য করেছে।সাধারণ মানুষের প্রাণ রক্ষা করেছে, এতেই আমরা খুশি।আজ আমরা যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি, কেন্দ্রীয় সাহায্য ছাড়া সম্ভব হত না।আমাদের ভ্যাকসিনটি আইসিএমআরের সহয়তায় তৈরি।উৎপাদনের আগেই সরকারের তরফে ১৫০০ কোটি টাকার অর্ডার দেওয়া হয়েছিল।’ ভ্যাকসিনের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য গুজরাট ও ব্যাঙ্গালোরে নতুন ইউনিট খোলা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।একইসঙ্গে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, চলতি বছর তৃতীয় বা চতুর্থ ভাগে ভারত বায়োটেক কোভ্যাকসিনের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেয়ে যাবে।যতক্ষণ না পর্যন্ত ওই ভ্যাকসিনকে জরুরিভিত্তিতে ব্যবহারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোভ্যাক্সিনের দুটো ডেজ যারা নিয়েছেন তাঁদের বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া যাচ্ছে না।
একইসঙ্গে কোভ্যাক্সিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বলতে গিয়ে সংস্থার প্রধান জানান, যে কোন টিকা নিলেই শরীরে কিছু প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।আমাদের ভ্যাকসিনও তার ব্যতিক্রম নয়।প্রথন ডোজ নেওয়ার পরও অনেকে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন।কারণ, একটি ডোজ দেহে অর্ধেক সুরক্ষা দিতে পারে।দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হতে সময় লাগে।তবে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর কেউ সংক্রমিত হলে সেটা ভয়ঙ্কর পর্যায়ে পৌঁছোবে না।
শিশুদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর নিয়ে নীতি আয়োগের সদস্য ভি কে পাল জানান, শিশুরা যাঁরা করোনা আক্রান্ত হয়েছে, তাঁদের মধ্যে মৃদু উপসর্গ দেখা দেয়।শিশুদের মধ্যে বেশিরভাগই অ্যাসিমটোমেটিক।শিশুদের মধ্যে মৃদু উপসর্গ দেখা দেওয়ার জন্যই করোনা আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে মৃত্যুর হার কম।শিশুদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ দ্রুত শেষ করা দরকার যাতে তাঁরা সংক্রমণ ছড়াতে না পারে।