করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার একমাস পূর্ণ হল আজ। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার স্মৃতি এখনও রাতের ঘুম কেড়ে নেয় অনেকের। এরই মাঝে এবার বাংলার অপর এক পড়শি রাজ্যে বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেল একটি এক্সপ্রেস ট্রেন। জানা গিয়েছে, ভাঙা চাকা নিয়েই পবন এক্সপ্রেস প্রায় ৩৫ কিলোমিটার ছোট গতকাল। পরে আতঙ্কিত রেলযাত্রীরাই চেন টেনে ট্রেনটিকে থামায়। বৈশালীর সোনপুর বিভাগের হাজিপুর-মুজাফফরপুর রেলপথে এই ঘটনাটি ঘটে। যাত্রীদের চেন টানার কারণে ট্রেনটি বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রেহাই পেল বলে মত বিশেষজ্ঞদের। জানা গিয়েছে, পবন এক্সপ্রেসের এস১১ কোচের একটি চাকার উপরের অংশ ভেঙে গিয়েছিল। ট্রেনটি চলার সময় তাই সেটি থেকে অদ্ভূত আওয়া হচ্ছিল। ট্রেনের গতি বাড়ার সাথে সাথে আওয়াজ আরও জোরে বাড়ে। এই আবহে বগির ভেতরে যাত্রীদের মধ্যে হৈচৈ পড়ে যায়। পরে যাত্রীরা চেন টেনে ট্রেনটি থামায়।
ট্রেনটি ভাঙা চাকাতেই মুজফফরপুর থেকে ভগবানপুর পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটার ছোটে বলে জানা যায়।। ট্রেনটি ভগবানপুর স্টেশনে থামলে ওই বগির যাত্রীরা নেমে দেখেন যে একটি চাকার উপরের অংশটি ভেঙে গিয়েছে। যাত্রীরা জানান, এরই মধ্যে ট্রেনটি হর্ন বাজিয়ে চলতে শুরু করে। তার মাঝে যাত্রীরাই চিৎকার শুরু করে ট্রেনটি থামানোর জন্য। পরে চেন টানা হয়। এরপর রেলওয়ে পুলিশ ও অন্যান্য রেল কর্মীরা এসে কন্ট্রোলরুমে খবর দেয়। যাত্রীদের সতর্কতার কারণেই বড় দুর্ঘটনা এড়ায় ট্রেনটি। নয়ত চাকার ঘর্ষণে ট্রেনের ট্র্যাক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারত। বা এই ট্রেনটি লাইনচ্যুত হওয়ার আশঙ্কাও ছিল।
এদিকে ভাঙা চাকার বিষয়টি রেলকর্মীদের নজরে আসতেই সেটিকে সেখানেই দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনা প্রসঙ্গে রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বীরেন্দ্র কুমারও জানান, চাকা ভাঙার খবর পেয়ে ভগবানপুরে ট্রেন থামিয়ে দেওয়া হয়। মুজাফফরপুর থেকে নয়া কামরা নিয়ে আসা হয় ট্রেনের জন্য। এই আবহে ট্রেনটি প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ভগবানপুর স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল। রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত রেল যাত্রীরা ট্রেনের বগি পরিবর্তনের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে রেলের অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ভগবানপুর স্টেশনে পৌঁছে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন।
পরে রাত ১১টা ২৮ মিনিটে ট্রেনটি মুম্বইয়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় ভগবানপুর থেকে। ঘটনা প্রসঙ্গে সোনপুর ডিভিশনের ডিআরএম নীলমণি জানান, ভগবানপুর স্টেশনে পবন এক্সপ্রেসের এস-১১ কোচের একটি চাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ট্রেন থামানোর পর বগি বদল করা হয়। এরপর ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেয়। রবিবার সন্ধ্যা ৬টা ৮ মিনিটে ট্রেনটি ভগবানপুর স্টেশনে পৌঁছেছিল। পরে ট্রেনটি প্রায় ৫ ঘন্টা ২০ মিনিট পরে মুমবাইয়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। একই সঙ্গে এ ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।