কোচবিহারে রেল অবরোধের জেরে বিপর্যস্ত অসমের ট্রেন চলাচল। বুধবার আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের জোড়াই রেল স্টেশনে অবরোধে সামিল হন 'গ্রেটার কোচবিহার পিপল'স অ্য়াসোসিয়েশন' (জিসিপিএ)-এর নেতা, কর্মী ও সমর্থকরা। তার জেরেই অসমে রেল পরিষেবা চূড়ান্তভাবে ব্যাহত হয়।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই পৃথক কোচবিহার রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন জিসিপিএ-র সদস্য ও সমর্থকরা। সেই আন্দোলনের রেশ ধরেই এদিন এই রেল অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয় বলে জানা গিয়েছে।
এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যাতে কোনও অশান্তি না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করেছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল (এনএফআর) কর্তৃপক্ষ। রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে অবস্থানস্থল ও তার আশপাশে ৫০০ জনেরও বেশি সদস্যের বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
সেই দলে রয়েছে - আরপিএফ, জিআরপি এবং স্থানীয় থানার পুলিশবাহিনী। অবরোধের জেরে কোনওভাবেই যাতে আমজনতার কোনও ক্ষতি না হয়, তা প্রশাসনের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
এদিকে, এই অবরোধ কর্মসূচির জেরে একাধিক ট্রেন হয় বাতিল করতে হয়েছে, অথবা বাধ্য হয়েই সেগুলিকে ঘুর পথে চালানো হচ্ছে। এর ফলে আখেরে ভুগতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের।
বাতিল হয়ে যাওয়া ট্রেনের তালিকায় রয়েছে, নিউ জলপাইগুড়ি-গুয়াহাটি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস এবং বঙ্গাইগাঁও-নিউ জলপাইগুড়ি এক্সপ্রেস।
এছাড়া, যে ট্রেনগুলি ঘুরপথে চালানো হচ্ছে, সেগুলি হল - ব্রহ্মপুত্র মেল, কামরূপ এক্সপ্রেস, একাধিক রাজধানী এক্সপ্রেস ট্রেন এবং বিবেক এক্সপ্রেস। এই ট্রেনগুলি অধিকাংশই ফকিরাগ্রাম - গোলকগঞ্জ - নিউ কোচবিহার রুট ধরে ঘুরপথে চালানো হচ্ছে।
এই প্রেক্ষাপটে যে যাত্রীরা বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়েছেন, তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে রেলের তরফে বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়। তাঁদের নির্দিষ্ট গন্তব্য়ে পৌঁছে দিতে বাসের বন্দোবস্ত করা হয়। এমনকী, রেল যাত্রীদের বিভিন্ন ছোট চারচাকা গাড়িতে করেও রওনা করিয়ে দেওয়া হয়।
তবে, রেলের তরফে সমস্য়া মোকাবিলার চেষ্টা করা হলেও তাতে সব যাত্রী দুর্ভোগের হাত থেকে রেহাই পাননি। তাঁদের অনেককেই বিকল্প যান পেতে গিয়ে রীতিমতো নাজেহাল হতে হয়।
পরবর্তীতে এহেন যাত্রী দুর্ভোগের জন্য বিবৃতি প্রকাশ করে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করে রেল কর্তৃপক্ষ। তারা জানায়, আচমকা রেল অবরোধ শুরু হওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। কর্তৃপক্ষের তরফে পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
তারা লিখেছে, 'পিকেটিংয়ের জন্য পরিষেবা ব্যাহত হওয়ায় আমরা গভীরভাবে দুঃখিত।'