অবশেষে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে মৈত্রী সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচল শুরু হতে চলেছে। প্রায় তিন বছর আগে এই সেতুর উদ্বোধন হলেও পরিকাঠামোগত সমস্যার কারণে ভারত বাংলাদেশের মধ্যে এই সেতুতে যান চলাচল শুরু করা যায়নি। এবার দ্রুত এই সেতুর ওপর দিয়ে যান চলাচলের উদ্যোগ নিয়েছে দুই দেশ। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: শীঘ্রই চালু হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু, আগরতলা-আখুরা রেল যোগাযোগ, বার্তা ত্রিপুরার CMর
উল্লেখ্য, ১.৯ কিলোমিটার দীর্ঘ মৈত্রী সেতুটি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাব্রুম শহর এবং বাংলাদেশের পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলাকে সংযুক্ত করেছে। এই সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছিল ১৩৩ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ৯ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়াল মাধ্যমে সেতুটি উদ্বোধন করেন। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রতীক হিসেবে সেতুটির নাম দেওয়া হয় মৈত্রী সেতু।
ত্রিপুরার বাণিজ্য বিভাগের সচিব কিরণ গিত্তে জানিয়েছেন, প্রথমে যাত্রী চলাচল শুরু হবে। তারপরে পণ্য পরিবহণ শুরু করতে দুই বা তিন মাস সময় লাগবে। উল্লেখ্য, এই সেতুর মাধ্যমে পণ্য পরিবহণ শুধুমাত্র রাজ্যের জন্য নয়, সমগ্র উত্তর-পূর্বের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর ত্রিপুরার সাব্রুম থেকে মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
কিরণ জানান, ত্রিপুরার সিপাহিজলা জেলার কমলাসাগর সীমান্ত হাট যা কোভিড অতিমারির কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেটি খুব শীঘ্রই আবার চালু হবে। বর্তমানে দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় অবস্থিত শ্রীনগর সীমান্ত হাট চালু রয়েছে।
এদিকে, জাতীয় সড়কের পাশে শিল্পাঞ্চল সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বলে দাবি করেছেন বাণিজ্য সচিব। তিনি জানান, গত কয়েক বছরে জাতীয় সড়কের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। যদি ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি না আসে তাহলে জাতীয় সড়কের রূপান্তরের উদ্দেশ্য বৃথা যাবে। তাই শিল্পাঞ্চল স্থাপনের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ৬ মার্চ দিল্লিতে নর্থ-ইস্ট ইনভেস্টমেন্ট সামিট অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যেখানে ৬ জন উদ্যোক্তা ইতিমধ্যেই শিল্প ইউনিট স্থাপনের জন্য ২৯.৮৫ কোটি টাকা সেখানে বিনিয়োগ করেছেন। তিনি জানান, এই সেতু উত্তর-পূর্ব ভারতের অর্থনীতিকে আরও চাঙ্গা করবে। সেই সঙ্গে মৈত্রী সেতু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের মধ্যে বাণিজ্য ও যোগাযোগের নতুন পথের সূচনা করবে।