আসন্ন গোয়ার নির্বাচনের আগে সৈকত রাজ্যে সংগঠন মজবুত করতে মহুয়া মৈত্রের দুই ডেপুটি নিয়োগ করল তৃণমূল কংগ্রেস। গোয়ায় তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য এর আগে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদকে। আর এবার সেই রাজ্যে ভোট আরও এগিয়ে আসতেই তাঁর ডেপুটি করে সেই রাজ্যে পাঠানো হচ্ছে তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ সুস্মিতা দেব ও আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী। সোমবারই ঘাসফুল শিবিরের তরফে জানানো হয় যে সুস্মিতা ও সৌরভকে গোয়ায় কো-ইনচার্জ হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে।
এদিকে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই অসমের বাঙালি নেত্রী সুস্মিতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ত্রিপুরায় তৃণমূলের দায়িত্ব সামলানোর। মোটের ওপর সেই কাজ ভালো মতোই করছেন সুস্মিতা। আর এবার আরও এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হল তাঁকে। এই নিয়োগে অবশ্য প্রশ্ন উছেঠে রাজনৈতিক মহলে। সুস্মিতাকে কো-ইনচার্জ করা কি নেহাতই সংগঠন শক্তিশালী করার রণকৌশল, নাকি মহুয়া মৈত্রে ধীরে ধীরে আস্থা হারাচ্ছে দল?
উল্লেখ্য, গোয়ায় নিজেদের সংগঠন বিস্তারে কংগ্রেস ভাঙানো থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের দলে নিয়েছে তৃণমূল। গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেসের হেভিওয়েট লুইজিনহো ফেলেইরো, অলিম্পিক পদকজয়ী তাকরা টেনিস খেলোয়াড় লিয়েন্ডার পেজ, অভিনেতা নাফিসা আখতারদের দলে নিয়ে গোয়াবাসীদের মন জয়ের ছক কষেছে তৃণমূল। তবে এরই মাঝে কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া প্রাক্তন বিধায়ক তোপ দেগে দলত্যাগ করেছেন। পরপর জনমত সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে যে গোয়ায় দ্বিতীয় স্থানেও উঠতে পারবে না তৃণমূল। এই আবহে গোয়া ইউনিটের দায়িত্বে থাকা মহুয়ার দিকে আঙুল উঠতেই পারে। এই পরিস্থিতিতে আগরতলায় দলকে ‘দ্বিতীয়’ স্থানে তুলে আনা সুস্মিতাকে গোয়ায় পাঠিয়ে কি কোনও বার্তা দিতে চাইছে তৃণমূল? প্রশ্ন ঘুরছে রাজনৈতিক মহলে।
প্রসঙ্গত, এর আগে নদিয়ায় প্রশাসনিক বৈঠক চলাকালীন দলীয়নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ধমক’ শুনতে হয়েছিল মহুয়াকে। দলীয় কোন্দল নিয়ে মমতার বক্তব্যে কিছুটা হলেও ‘কান লাল’ করেছিল মহুয়ার। এরপরও মোদী ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত গৌতম আদানি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে আসার পরপরই সেবিকে আদানির বিরুদ্ধে চিঠি দিয়েছিলেন মহুয়া। এই সব মিলিয়ে মহুয়া নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই ‘অস্বস্তি’ আছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। এই আবহে গোয়ায় শুধু মহুয়ার উপর ভরসা না রেখে দুই ডেপুটি নিয়োগেও জল্পনা বেড়েছে।