মুম্বই সফরে গিয়ে এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারকে পাশে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘কোথায় ইউপিএ? ইউপিএ এখন আর নেই।’ মমতা যখন এই কথা বলছেন, তখনই হাত উঁচিয়ে সাংবাদিকদের কিছু ইঙ্গিত করতে দেখা গিয়েছিল শরদ পাওয়ারকে। তার আগে বা পরে শরদের মুখ থেকে অবশ্য কংগ্রেস বিরোধী একটাও শব্দ বের হয়নি। আর মুম্বই সফরে যখন মমতা কংগ্রেসকে বিঁধতে ব্যস্ত, সেই সময় দিল্লিতে ক্রমেই ‘বন্ধুহীন’ হচ্ছে তৃণমূল।
দিল্লিতে সংসদীয় রাজনীতির মারপ্যাঁচে নিজেদের স্বতন্ত্র অস্তিত্বের জানান দিতে কংগ্রেসের ডাকা কোনও বৈঠকেই যাচ্ছে না তৃণমূল। নিজেদের রণকৌশল নিজেরাই তৈরি করছে ঘাসফুল শিবির। তাদের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘একা লড়ে বিজেপিকে হারিয়েছি, তাই কংগ্রেসের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা নেই।’ তবে বাকি আঞ্চলিক দলগুলি যে সেরম ভাবে না, তা ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। ইউপিএ-তে থাকা এনসিপি তো বটেই, দিল্লিতে কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে যোগ দিয়েছে শিবসেনাও। উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস শিবসেনার জোট শরিক হলেও কেন্দ্রীয় স্তরে সেনার ইউপিএ-তে অন্তর্ভূক্তি নিয়ে ধোঁয়াশা যেন চিরকালীন। এদিকে একদা যে আম আদমি পার্টির সঙ্গে কংগ্রেসের দূরত্ব ছিল, সেই আম আদমি পার্টি পর্যন্ত কংগ্রেসের বৈঠকে যোগ দিচ্ছে, যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করছে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের ‘একলা চলো’ নীতির জেরে প্রশ্ন উঠছে, তৃণমূল কি তবে ক্রমে বন্ধুহীন হয়ে পড়ছে?
১২ জন সাংসদের সাসপেনশন ছাড়া আর সব বিষয়েই তৃণমূল নিজেদের ইস্যু নিজেরে বেছেছে। এমনকি সাংসদদের সাসপেনশন ইস্যুতে সংসদ থেকে ওয়াকআউটের ক্ষেত্রেও কংগ্রেসের সঙ্গে পা মেলায়নি তৃণমূল। এরপরই মুম্বই সফরকালে মমতার সঙ্গে বৈঠক করেন উদ্ধব ঠাকরের ছেলে আদিত্য ঠাকরে ও শিব সেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত। তবে মুম্বইতে বিজেপি বিরোধিতার সুর মিললেও দিল্লিতে গিয়ে সেনার তাল বাজছে কংগ্রেসের সুরে। এই আবহে ‘ভাই’ অরবিন্দ কেজরিওয়ালও তৃণমূলের পাশে আছে কি না, তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। তাই কংগ্রেস ভাঙিয়ে দল বাড়ালেও তৃণমূলের পরিসর বাড়া নিয়ে থাকছে প্রশ্ন।