বুধবারই ছিল ত্রিপুরা বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনের শেষ দিন। আর সেই দিনেই মন্ত্রী বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করা হল।
বুধবারের সেই ঘোষণা অনুসারে, রাজ্য়ের মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্য়ান্য মন্ত্রী, বিধায়ক, এমনকী প্রাক্তন মন্ত্রী ও বিধায়কদের বেতন কাঠামোরও সংস্কার করা হয়। যার অধীনে এই সমস্ত ব্যক্তিদেরই অন্য়ান্য সুবিধা - যেমন - পেনশন-সহ অন্য়ান্য আর্থিক পরিষেবা আরও বাড়ানো হল। এমনকী, কোনও বিধায়ক যদি তাঁর মোট ৫ বছরের মেয়াদকালে মাত্র একদিনই অফিসের কাজ করেন তাহলেই এই সমস্ত সুবিধা পাবেন তিনি। এর জন্য তাঁকে ন্যূনতম সাড়ে চার বছর (এত দিন যা নিয়ম ছিল) কাজ করতে হবে না।
৯ নম্বর বিলের অধীনে, নতুন সংশোধিত গাইডলাইন অনুসারে, মন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধী দলনেতা, সরকারের চিফ হুইপ এবং ত্রিপুরা বিধানসভার সমস্ত বিধায়কদের বেতন, ভাতা, মহার্ঘ্য ভাতা এবং অন্য়ান্য সুবিধা সংশোধন করা হয়েছে। যা সংশ্লিষ্ট মূল বিল বা আইনের নবম সংশোধনী।
এর ফলে এবার থেকে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মাসিক বেতন পাবেন - ৯৭,০০০ টাকা। উপমুখ্যমন্ত্রী পাবেন ৯৬,০০০ টাকা। এবং অন্য মন্ত্রীরা পাবেন ৯৫,০০০ টাকা। এর আগে এই তালিকায় থাকা প্রথম দুই পদাধিকারীর মাসিক বেতন ছিল যথাক্রমে ৫৩,৫৬০ টাকা এবং ৫২,৬৩০ টাকা।
এছাড়াও, রাজ্য়ের বাদবাকি মন্ত্রী, স্পিকার, বিরোধী দলনেতা এবং চিফ হুইপের মাসিক বেতন ছিল ৫১,৭৮০ টাকা। যা এবার থেকে বেড়ে হল ৯৫,০০০ টাকা। ডেপুটি স্পিকারের মাসিক বেতন ছিল ৪৮,৪২০ টাকা এবং তা বেড়ে হল ৯৩,০০০ টাকা।
ত্রিপুরার সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী রতনলাল নাথ এই প্রসঙ্গে, সংশ্লিষ্ট মূল আইনের ১৭ নম্বর ধারার (১) নম্বর উপধারা অনুসারে, বিধানসভার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের অবসর জীবনের সমস্ত সুবিধা পেতে অন্তত চারবছর দায়িত্ব পালন করতেই হত।
২০১৯ সালে সেই আইনের পঞ্চম সংশোধন করা হয়। তারও পরে ২০২২ সালে সপ্তম সংশোধনীর সময় ঠিক করা হয়, এই সমস্ত সুবিধা পেতে অন্তত সাড়ে চারবছর অফিসে কাজ করতে হবে। রতনলাল জানান, এর ফলে সেইসব বিধায়করা সমস্যায় পড়ছিলেন, যাঁরা কোনও কারণে পুরো সাড়ে চার বছর কার্যালয়ে থাকতে পারছিলেন না।
শুধু তাই নয়। যদি কোনও বিধায়ক সাড়ে চারবছর তাঁর সরকারি অফিসে আসীন থাকার আগেই প্রয়াত হতেন, তাহলে তাঁদের বিধবা স্ত্রীরাও সমস্ত সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতেন। এবার তাই সাড়ে চার বছরের ওই ন্যূনতম সময়সীমার বদলে 'যেকোনও সময়' যুক্ত করা হয়েছে। ফলত, এবার আর আগের মতো সমস্য়া হবে না।
যদিও এই বেতন বৃদ্ধির পরও যে ত্রিপুরার মন্ত্রী ও বিধায়করা সারা দেশের বিধানসভাগুলির নিরিখে সবথেকে কম বেতনই পাবেন বলে জানিয়েছেন রতনলাল।