২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ত্রিপুরায়। বর্তমানে সেই রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে গেরুয়া শিবির। তবে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া বইছে বাঙালি অধ্যুষিত এই রাজ্যে। এই আবহে নির্বাচনের আগে সেই পশ্চিমবঙ্গ থেকে ত্রিপুরায় ৪০ জন নেতাকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। বিধানসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বরা ত্রিপুরাতে যাবেনই। তবে বঙ্গ বিজেপির এই ৪০ নেতাকে ত্রিপুরার ৪০ বিধানসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, সিপিএমকে হারিয়ে পাঁচবছর আগে ত্রিপুরায় ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন বিপ্লব কুমার দেব। তবে তাঁর মেয়াদ পূরণের আগেই তাঁকে সরিয়ে মানিক সাহাকে আসনে বসানো হয়েছিল। এই আবহে টালমাটাল গদি বাঁচাতে পশ্চিমবঙ্গের বঙ্গভাষী নেতাদের ওপর ভরসা রাখতে চাইছে গেরুয়া শিবির।
২০১৮ সালে ৬০ আসনের ত্রিপুরা বিধানসভায় ৩৪টি আসন দখল করেছিল বিজেপি। এর আগে ২০১৩ সালে তারা ছিল শূন্য। তবে গতবার ছিল ত্রিমুখী লড়াই। এবার সিপিএম, কংগ্রেসের পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেসকেও মোকাবিলা করতে হবে বিজেপিকে। অসমের বাঙালি নেত্রী সুস্মিতা দেবকে ত্রিপুরার দায়িত্বে রেখেছে ঘাসফুল শিবির। ত্রিপুরার ওপর বিশেষ নজর রয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ২০২৪ সালে সর্বভারতীয় চ্যালেঞ্জার হওয়ার লক্ষ্যে ত্রিপুরা এক বড় পরীক্ষা হতে চলেছে তৃণমূলের জন্য। ত্রিপুরার পুর নির্বাচনের পাশাপাশি ৪টি বিধানসভার উপনির্বাচনেও অংশ নিয়েছিল তৃণমূল। সেই নির্বাচনে ভালো ফল না করতে পারলেও বিধানসভা নির্বাচনে আরও শক্তি দিয়ে ঝাঁপাতে পারেন মমতা-অভিষেক। এই আবহে ত্রিপুরায় বঙ্গ বিজেপির নেতারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবেন বলে আশা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষরা দফায় দফায় সেই রাজ্যে যাবেন প্রচারে।
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরার কিছুটা উপজাতি অধ্যুষিত। তবে সেই এলাকাগুলি ছাড়া ত্রিপুরা রাজ্যের বড় অংশ বঙ্গভাষী। এই আবহে প্রচারে ভাষা এক বড় হাতিয়ার। সুকান্ত মজুমদার এবং সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী ইতিমধ্যেই ৪০ নেতার তালিকা তৈরি করেছেন। বাংলায় ভোট পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং সাফল্য দেখাতে পেরেছেন, এমন নেতারাই ওই তালিকায় জায়গা পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ত্রিপুরার যে ৪০টি আসন বাঙালি অধ্যুষিত, সেখানে ঘাঁটি গাড়বেন এই ৪০ নেতা। এই নিয়ে সুকান্ত বলেন, 'বিজেপি একটা সর্বভারতীয় দল। গুজরাটে বিজেপি অনেক শক্তিশালী। সেখানেও আমি প্রচারে গিয়েছি। তাই বিজেপির কাছে এটা নতুন কিছু নয়।'