তৃণমূল কংগ্রেস ঘাঁটি গেড়েছে ত্রিপুরায়। তারপর থেকে বিপ্লব দেবের ‘ইমেজ গ্রাফ’ পড়তে শুরু করেছে। চরম আক্রমণ নামিয়ে আনা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা–মন্ত্রীদের উপর। আইপ্যাকের টিমের উপরও আক্রমণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই কঠিন পরিস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ ত্রিপুরার রাজ পরিবারের উত্তরসূরি প্রদ্যোত মাণিক্যের সঙ্গে বৈঠক সেরে এসেছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের পাশে থাকার বার্তা তিনি দিয়েছেন। আর তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। কারণ লক্ষ্য উপজাতি, আদিবাসী ভোট। এই পরিস্থিতিতে মহারাজার জন্মদিন পালনে তৎপর হতে দেখা গেল বিপ্লব দেবকে। মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মাণিক্যের ১১৩ তম জন্মদিন। আর তা ঘিরেই উন্মাদনা তুঙ্গে।
এই জন্মদিন উপলক্ষ্যে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব বলেন, ‘আধুনিক ত্রিপুরা গড়ার ভাবনায় অনুপ্রাণিত, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন এই বিচক্ষণ ব্যক্তিত্বের নেতৃত্বে ত্রিপুরার সর্বাঙ্গীন বিকাশের লক্ষ্যে গৃহীত নানান বলিষ্ঠ পদক্ষেপ ত্রিপুরাকে শিক্ষা–সহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও প্রভূত উন্নতির শিখড়ে পৌঁছে দিয়েছে। আত্মপ্রচার বিমুখ এক মহান প্রাণ মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুর দেববর্মণ তাঁর অবদানের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে নিজের নাম লিখে গিয়েছেন। আজ তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর আয়োজিত মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্যের ১১৩ তম জন্মজয়ন্তীতে আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করি। মহারাজার নির্দেশিত পথে হাঁটলে আরও আগেই শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা নির্মাণ করা সম্ভব হত।’
তিনি জানান, জন্মদিনে সরকারি ছুটি ঘোষণা, সরকারিভাবে জন্মদিন পালনের উদ্যোগ এবং মহারাজার নামাঙ্কিত বিমানবন্দরের মাধ্যমে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হচ্ছে। ভারতীয় বা ত্রিপুরার সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, এমন একটি মানসিকতাকে আগে রাজ্যে বেশি গুরুত্ব দেওয়ায় ত্রিপুরার প্রকৃত ইতিহাস বা রাজাদের অবদান সম্পর্কে যাতে মানুষ না জানতে পারে তার চেষ্টা করা হয়েছিল।
এদিকে মহারাজার জন্মদিন নিয়ে ট্যুইট করেছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘মহারাজার দেখানো পথেই আগামীদিনে ত্রিপুরার উন্নয়ন হবে। তিনি যে কাজ করে গিয়েছেন তা আজও সাহস এবং উৎসাহ জোগায় ত্রিপুরার মানুষকে।’ ফলে এখানে যে আগামী দিনে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার গঠন করবে একপ্রকার সেই দাবিই করা হয়েছে। তাতে মানুষের উন্নয়ন হবে বলেও বার্তা দেওয়া হয়েছে।
এখন মহারাজার জন্মদিন পালন রাজনৈতিকভাবেও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ত্রিপুরার স্বশাসিত পার্বত্য পরিষদের নির্বাচনে দুর্দান্ত ফল করেছে প্রদ্যোত কিশোর মাণিক্যের তিপ্রামোথা। আর সেটাই ত্রিপুরার ১৬ আসন সরকার গঠনে বড় ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে৷ ২০২৩ সালে এখানে বিধানসভা নির্বাচন। সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এখন পায়ের জমি টলে যাওয়ায় রাজবাড়িকে কাছে টানতে চাইছেন বিপ্লব দেব বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।