বিগত কয়েক বছরে ত্রিপুরায় লোকালয়ে হাতির হানা বেড়েই চলেছে। তার ফলে প্রাণহানিও বেড়েছে। বিশেষ করে সম্প্রতি ত্রিপুরার খোয়াই এবং গোমতী জেলায় হাতির হানায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। তারপরেই লোকালয়ে হাতির হানা ঠেকাতে বড় পদক্ষেপ করতে চলেছে ত্রিপুরা সরকার। পরিখা খনন করার পাশাপাশি মানব বাসস্থানের কাছে এমন ধরনের গাছ লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে যা হাতিরা খেতে পছন্দ করে না।
আরও পড়ুন: মনসা পুজো দেখে বাড়ি ফেরার সময় শুঁড়ে করে তুলে আছাড় মারল হাতি, মৃত্যু ব্যক্তির
লোকালয়ে হাতির হানা ঠেকাতে সম্প্রতি ত্রিপুরার বনমন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মার নেতৃত্বে এবিষয়ে একটি বৈঠক। সেই বৈঠকে বন বিভাগের পাশাপাশি অন্যান্য বিভিন্ন বিভাগের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ছিলেন প্রধান মুখ্য বন সংরক্ষক (পিসিসিএফ), প্রধান বন সংরক্ষক (সিসিএফ) প্রমুখ। সেই বৈঠকে জঙ্গল লাগোয়া মানব বসতি সংলগ্ন এলাকা বরাবর পরিখা খননের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বনমন্ত্রী সংবাদ মাধ্যমের সামনে বলেন, প্রাথমিকভাবে এই দুটি জেলায় যেহেতু হাতির হানা বেশি তাই সেখানে জঙ্গল লাগোয়া লোকালয় সংলগ্ন এলাকায় রাজ্য সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে পরিখা খনন এবং গাছ লাগানো কাজ শুরু করবে। পরে কেন্দ্রের কাছ থেকে তহবিল চেয়ে প্রকল্পের একটি বিশদ প্রতিবেদন তৈরি করে পাঠানো হবে।
জানা যাচ্ছে, এই জেলা গুলির জঙ্গল লাগোয়া এলাকার মানুষজন গত ৩০ বছর হাতির তাণ্ডবে ভুগছেন। তাতে সব সময় তাদের আতঙ্কের মধ্যে কাটাতে হয়। তাই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বনমন্ত্রী। যে সমস্ত গাছপালা লাগানো হবে সেই তালিকায় রয়েছে অ্যাগেভ, ক্যাকটাস, লেবু, আদা প্রভৃতি। এই গাছগুলিকে বেড়া হিসেবে ব্যবহার করা হবে। আর এই গাছগুলি হাতিদের অপছন্দের হওয়ায় তারা গাছগুলির বাধা পেরিয়ে লোকালয়ে ঢুকতে পারবে না বলেই আশা করছেন আধিকারিকরা।
বনমন্ত্রী আরও জানান, খোয়াই জেলার তেলিয়ামুরার কাছে যে বিভাগটি অবস্থিত সেখানে তিনটি জায়গায় আন্ডারপাস তৈরির করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরফলে হাতিরা এই ভূগর্ভস্থ পথ হয়ে আথারোমুরার সংরক্ষিত বনাঞ্চলের দিকে যেতে পারবে।এরফলে সেখানকার মানুষজনও সুরক্ষিত থাকবে। হাতির তাণ্ডব থেকে মানুষকে রক্ষা করতে গত ফেব্রুয়ারিতে আরও কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেক্ষেত্রে হাতির গতিবিধি ট্র্যাক করতে রেডিও কলারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।