আগেই ৭১ শতাংশে আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের আসন জিতে নেয় শাসকদল বিজেপি। সেখানে হুমকি, ভয় দেখানো–সহ নানা ঘটনা ঘটিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করানো হয় বলে অভিযোগ। এবার বৃহস্পতিবার ত্রিপুরার পঞ্চায়েত নির্বাচনের বাকি আসনের ভোটগ্রহণ পর্বও শান্তিপূর্ণভাবে হল না। নানা এলাকায় বিস্তর হিংসা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। যদিও বিজেপির দাবি, উৎসবের মেজাজে অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে। আর ব্যাপক কারচুপি, ছাপ্পা ভোট এবং সন্ত্রাসের অভিযোগে সরব হয়েছে বিরোধীরা। আর তাই ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে ২৯ শতাংশ আসনে ভোট হল।
এদিকে ভোটের দিন সিপাহীজালা জেলায় ভোটারদের এবং বিরোধীদের উপর ব্যাপক মারধর করা হয়েছে বলে খবর। তার জেরে প্রাণভয়ে তাঁরা পালিয়ে গেলে সেখানে ভোট করিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। বাংলাদেশ সীমানা লাগোয়া গ্রামগুলিতে কড়া নজরদারি চালায় বিএসএফ। পঞ্চায়েত সমিতির ৫৮ শতাংশ এবং জেলা পরিষদের ১৭ শতাংশ আসনও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দখল করে নিয়েছিল ত্রিপুরার শাসকদল। তখন বিজেপি নেতাদের সাফাই ছিল, সাংগঠনিক দুর্বলতার জন্যই বিরোধীরা প্রার্থী খুঁজে পায়নি। আর এখন বাকি যে ২৯ শতাংশ আসন বেঁচে ছিল অর্থাৎ যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়েছিল সেখানে হিংসা নামিয়ে আনা হয়েছে বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: দিনে পাঁচবার মসজিদে আসতে হবে নচেৎ শাস্তি, সরকারি কর্মীদের ফতোয়া তালিবান প্রধানের
অন্যদিকে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক শরদিন্দু চৌধুরীর হিসাব অনুযায়ী, ত্রিপুরায় পঞ্চায়েতে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলাপরিষদে মোট আসন সংখ্যা ৬৮৮৯ টি। তার মধ্যে বিজেপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৪৮০৫টি আসনে ইতিমধ্যেই জয় পেয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬৩৭০টি আসনের মধ্যে বিজেপি ৪৫৫০টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েতের বাকি ১৮১৯টি আসনে গতকাল নির্বাচন হয়েছে। যেখানে বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে ১৮০৯টি আসনে। সিপিএম প্রার্থী দিয়েছে ১২২২টি আসনে এবং কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে ৭৩টি আসনে। বিজেপির জোট সঙ্গী তিপ্রা মোথা ১৩৮টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে।
এছাড়া পঞ্চায়েত সমিতির ৪২৩টি আসনের মধ্যে ২৩৫ অর্থাৎ ৫৫ শতাংশ আসনে বিজেপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে। জেলা পরিষদের ১১৬টি আসনের মধ্যে বিজেপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে ২০টি আসনে। অর্থাৎ তারা প্রায় ১৭ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে। আগামী ১২ অগস্ট ভোটগণনা করা হবে। এই বিষয়ে ত্রিপুরার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশিস কুমার সাহা বলেন, ‘এখানে পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হয়েছে। শাসকদল বিরোধীদের ৭০ শতাংশ আসনে মনোনয়ন জমা দিতে দেয়নি। পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনেই হামলা হয়েছে।’ আর তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, ‘এরা বাংলায় কিছু হলেই বড় বড় কথা বলেন। গণতন্ত্রের কথা বলেন। এখন ত্রিপুরা রাজ্যে কী হল?’