প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির আর্জি মেনে ইউক্রেনকে ‘টোমাহক’ ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার কথা ভাবছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাশিয়া। রবিবার ক্রেমলিন জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেনকে টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করে, তাহলে যুদ্ধ পরিস্থিতি ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক ও নাটকীয় পর্যায়ে’ পৌঁছাবে।
আরও পড়ুন-প্রতিশোধের আগুনের গ্রাসে সীমান্ত! আফগান-পাকিস্তান তুমুল সংঘর্ষ, নেপথ্যে কে?
গত সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেনকে টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার আগে তিনি জানতে চান, কিয়েভ এসব ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে কী করতে চায়। তিনি যুদ্ধ আরও বাড়াতে চান না, তবে ‘আংশিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন’ বলেও জানান। টোমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের সর্বোচ্চ পাল্লা প্রায় ২,৫০০ কিলোমিটার, যা দিয়ে ইউক্রেন রাশিয়ার অভ্যন্তরে, এমনকী মস্কোতেও হামলা চালাতে সক্ষম হবে। মার্কিন কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিসের তথ্য মতে, কিছু পুরনো টোমাহক মডেলে পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনের সক্ষমতাও রয়েছে। এই প্রসঙ্গে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ রুশ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, ‘টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র বিষয়টি আমাদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এখন এমন এক নাটকীয় সময় চলছে, যখন সব পক্ষ থেকেই উত্তেজনা বেড়ে চলেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভাবুন, একটি দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার দিকে ছুটে আসছে-যেটি পারমাণবিকও হতে পারে। তখন রাশিয়া কী ভাববে? কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে? বিদেশি সামরিক বিশেষজ্ঞদের এটা বুঝতে হবে।’ রুশ কর্মকর্তারা আগেও বলেছেন, তারা এখন পশ্চিমীদের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়িত, যা ১৯৬২ সালের কিউবা মিসাইল সংকটের পর সবচেয়ে বড় মুখোমুখি অবস্থান।
আরও পড়ুন-‘পাপ মোচন!' ব্রাহ্মণের পা ধুইয়ে সেই জল খেলেন ওবিসি যুবক, মধ্যপ্রদেশে হুলুস্থূল
সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে মার্কিন সামরিক বাহিনীর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ছাড়া সম্ভব নয়। তাই ইউক্রেনকে এই অস্ত্র সরবরাহ করা হলে, যুদ্ধ ‘নতুন ও বিপজ্জনক পর্যায়ে’ পৌঁছাবে। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কয়েক মাস ধরে ইউক্রেনকে রাশিয়ার জ্বালানি স্থাপনায় দূরপাল্লার হামলায় সহায়তা করছে। ওয়াশিংটনের গোয়েন্দা তথ্যের সহায়তায় ইউক্রেন ড্রোন হামলার রুট, উচ্চতা ও সময়সূচি নির্ধারণ করছে-যার ফলে রুশ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এড়ানো সম্ভব হচ্ছে। পুতিন বরাবরই ইউক্রেন যুদ্ধকে রাশিয়া ও পশ্চিমাদের সম্পর্কের একটি ‘ইতিহাস-নির্ধারক মুহূর্ত’ হিসেবে বর্ণনা করে আসছেন। তাঁর দাবি, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর পশ্চিমারা ন্যাটো সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাশিয়াকে অপমান করেছে এবং ইউক্রেন ও জর্জিয়ার মতো দেশগুলিতে হস্তক্ষেপ করে মস্কোর প্রভাব বলয় সংকুচিত করেছে। অন্যদিকে, ইউক্রেন ও তার মিত্ররা এই যুদ্ধকে রাশিয়ার সাম্রাজ্যবাদী দখল প্রচেষ্টা বলে অভিহিত করেছে এবং বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে-রুশ বাহিনীকে পরাজিত না করা পর্যন্ত লড়াই চলবে।