গত পরশু কাবুলে এয়ারস্ট্রাইক করেছিল পাকিস্তান। এই ঘটনায় তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের প্রধানকে খতম করেছিল বলে প্রাথমিক ভাবে দাবি করেছিল পাকিস্তান। তবে পরে দাবি করা হয়, টিটিপি প্রধান বহাত তবিয়তে বেঁচে আছেন। তবে কাবুলে পাক হামলার পর থেকেই পাকিস্তানে আত্মঘাতী হামলার হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছিল টিটিপি। এই আবহে গতরাতে পাকিস্তানের ডেরা ইসমাইল খান অঞ্চলে পাকিস্তানি পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আত্মঘাতী হামলা চালায় টিটিপি। এই বিস্ফোরণে পাকিস্তানের ২ জ জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। এবং আরও ৮ জন পাকিস্তানি জওয়ান জখম হয়েছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল শহরে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। স্থানীয় গণমাধ্যমের মতে, বিস্ফোরণের শব্দটি কাবুলের আবদুলহক স্কয়ারের আশেপাশে শোনা গিয়েছিল। এখানে বেশ কিছু সরকারি অফিস রয়েছে এবং এটি আবাসিক এলাকা। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়, এই বিস্ফোরণ পাকিস্তানের এয়ারস্ট্রাইকের কারণে হয়েছে। উল্লেখ্য, আফগান বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির ঐতিহাসিক ভারত সফরের সময়ই এই বিস্ফোরণ ঘটে। এদিকে কাবুলে হামলা প্রসঙ্গে তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি বলেন, আফগানিস্তানে কোনও সন্ত্রাসবাদী নেই। যারা এই নিয়ে অভিযোগ করেন, তাদের গিয়ে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা উচিত। এদিকে বিস্ফোরণের পর আফগান-তালিবানের এক মুখপাত্র বলেন, 'কাবুল শহরে বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা গিয়েছে। তবে কারও উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই, সব ঠিক আছে, ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।'
প্রসঙ্গত, তালিবানরা কাবুলে ক্ষমতায় আসার পরে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সফরে দিল্লি এসেছেন মুত্তাকি। আর সেদিনই কাবুলে এই বিস্ফোরণ। জানা যায়, মধ্যরাতের দিকে কাবুলের পূর্বাঞ্চলে শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছিলেন, আকাশে বিমানের আওয়াজ শোনা যায় এবং তার পরপরই বিস্ফোরণের আওয়াজও শোনা যায়। এরপর গুলির আওয়াজও শোনা যায়। আমু টিভি এবং অন্যান্য আফগান মিডিয়া সূত্রের মতে, টিটিপি নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদ লুকিয়ে থাকা সন্দেহে একটি নির্দিষ্ট কম্পাউন্ড লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছিল। তবে পরে মেহসুদের একটি অডিয়ো বার্তা প্রকাশ করা হয় টিটিপির তরফ থেকে। দাবি করা হয়, তিনি বেঁচে আছেন।
এর একদিন আগে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ আফগানিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। খাজা আসিফ বলেছিলেন, 'যথেষ্ট হয়েছে, আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। আফগানিস্তানের মাটি থেকে সন্ত্রাসবাদ অসহনীয়।' খাজা আসিফ আরও বলেন, তিনি এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তিন বছর আগে কাবুল সফর করেছিলেন এবং সেখানে সক্রিয় সন্ত্রাসীদের আস্তানা বন্ধ করার জন্য সতর্ক করেছিলেন। তাঁর কথায়, 'আমরা আফগান কর্তৃপক্ষকে বলেছি যে আপনার মাটিতে ৬০০০ থেকে ৭০০০ লোক রয়েছে যারা আমাদের জন্য হুমকি। আমরা গ্যারান্টি চেয়েছিলাম যে এই লোকেরা পাকিস্তানে ফিরে আসবে না, কিন্তু আফগান কর্তৃপক্ষ এই আশ্বাস দিতে রাজি ছিল না। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বৃহস্পতিবার দাবি করেছেন, সীমান্ত থেকে টিটিপি জঙ্গিদের তাড়ানোর জন্য আফগান সরকার ইসলামাবাদের কাছ থেকে তহবিল চেয়েছিল। তালিবানের প্রতি তাঁর এই হুঁশিয়ারির কয়েক ঘণ্টা পরেই বিমান হামলার খবর সামনে আসে।