ধর্ষণের ঘটনা নির্যাতিতার টু ফিঙ্গার টেস্ট নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং হিমা কোহলির ডিভিশ বেঞ্চ এই পদ্ধতিটিকে অবৈজ্ঞানিক বলে আখ্যা দেন। এই পদ্ধতিতে নির্যাতিতার পরীক্ষা করা হলে তা ‘অশোভন আচরণ’ বলে গণ্য করা হবে। উল্লেখ্য, বহুদিন আগেই ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল দেশে। তবে এখনও বহু ক্ষেত্রে এই পরীক্ষার প্রচলন রয়েছে। এই বিষটিকে ‘দুঃখজনক’ বলে আখ্যা দেয় সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
শীর্ষ আদালত আজ পর্যবেক্ষণ করে, ‘ধর্ষণ এবং যৌন নিপীড়নের অভিযোগের ক্ষেত্রে বারবার দুই আঙুলের পরীক্ষার ব্যবহার বন্ধ করতে বলেছে এই আদালত। তথাকথিত পরীক্ষার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এই পরীক্ষার মাধ্যমে নির্যাতিতা নারীদের পুনরায় বিভীষিকার শিকার করা হয়। দুই আঙুলের পরীক্ষা করা উচিত নয়... পরীক্ষাটি একটি ভুল ধারণার উপর ভিত্তি করে শুরু হয়। মনে করা হত যে, যৌন সক্রিয় মহিলাকে ধর্ষণ করা যায় না। কিন্তু এই কথা সত্যি নয়।’
শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়, ‘একজন মহিলার যৌন সক্রিয়তার উপর তাঁর সাক্ষ্যের সত্যতা নির্ভর করে না। এটা পুরুষতান্ত্রিক এবং যৌনতাবাদীদের প্রস্তাব করা পরীক্ষা। কারণ তারা মনে করত, একজন মহিলার যৌন সক্রিয়তার কারণে তাঁর ধর্ষণের অভিযোগ বিশ্বাস করা যায় না।’ এই আবহে সুপ্রিন বেঞ্চ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছে যাতে যৌন হেনস্থা এবং ধর্ষণের শিকার নির্যাতিতাদের ওপর টু ফিঙ্গার টেস্ট না করা হয়।
উল্লেখ্য, ধর্ষণের অভিযোগের ক্ষেত্রে 'টু ফিঙ্গার টেস্ট' নিষিদ্ধ করেছিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল যে ধর্ষণের শিকার নির্যাতিতার উপর 'টু ফিঙ্গার টেস্ট' তাঁর গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন করে। সরকারকে ধর্ষণের প্রমাণ হিসেবে অন্য উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি চালু করতে বলে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি বিএস চৌহান এবং বিচারপতি এফএমআই কালিফউল্লার একটি বেঞ্চ বলেছিল, টু ফিঙ্গার টেস্টের রিপোর্ট যদি পজিটিভ হয়, তা এটা প্রমাণ করে না যে সম্মতি নিয়ে বা বিনা সম্মতিতেই যৌন সঙ্গম হয়েছিল।