পরিযায়ী শ্রমিকদের মারধর করার অভিযোগ উঠল তামিলনাড়ুতে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার চারজনকে গ্রেফতার করেছে কোয়েম্বাটুর পুলিশ। এদের মধ্যে একজন ডানপন্থী সংগঠন হিন্দু মুন্নানির সক্রিয় সদস্য। আর বাকি তিনজন প্রাক্তন সদস্য বলে খবর। বাংলা থেকে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। গত দু’সপ্তাহ ধরে এখানে গুজব এবং ভুয়ো ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে। সেই ভুয়ো ভিডিয়ো–তে দেখা যায়, পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর হামলা করা হচ্ছে এবং খুন করা হচ্ছে হিন্দি ভাষায় কথা বলার জন্য। তামিলনাড়ু জুড়ে এই গুজব ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে।
এদিকে এই গুজব বা ভিডিয়ো ছড়িয়েছে বিজেপি বলে অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন বিষয়টি নিয়ে কড়া পদক্ষেপ নেন এবং বিজেপি নেতাদের এমন বক্তব্য খারিজ করে দেন। ভুয়ো খবর ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ১১টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এই গুজব ছড়ানোর অভিযোগে বিজেপি নেতা কে আন্নামালাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘পরিযায়ী শ্রমিকরা এখানে নিরাপদ নয় বলে ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে। এসবের পিছনে বিশেষ কোনও উদ্দেশ্য আছে। যা আমরা সামনে নিয়ে আসতে চাইছি।’
নেপথ্যে ঘটনাটি ঠিক কী? রবিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ চারজন অভিযুক্ত একটি পানশালায় বসে মদ্যপান করছিল। সেই পানশালার সঙ্গে একটি রেস্তোরাঁ রয়েছে। সেখানে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা রাতের খাবার খাচ্ছিলেন। এই পরিযায়ী শ্রমিকরা একটি গয়নার দোকানে কাজ করেন। তখন মূল অভিযুক্ত সূর্য ওরফে মরুগান তাঁদের প্ররোচিত করতে থাকে। তাঁদের হিন্দিতে প্রশ্ন করা শুরু হয়। এই সূর্য হিন্দু মুন্নানি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। আর এক সদস্য প্রকাশ পুলিশকে জানিয়েছে, সে খুব শীঘ্রই হিন্দু মুন্নানির সক্রিয় সদস্য হতে চলেছে। এরাই হিন্দিতে প্রশ্ন করে উত্তেজিত করে। আর উত্তর তামিলে দিলেই তাঁদের মারধর করা হয়।
তারপর ঠিক কী ঘটল? পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত সূর্য প্ররোচিত করতেই হিন্দিতে প্রশ্ন করে। তখন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা তামিলে উত্তর দিলে সূর্য সজোরে মুখে ঘুসি মেরে চারজন মিলে চম্পট দেয়। এমনকী রাতে একটি ফুচকার দোকানে গিয়েও একজনকে মারধর করে। আর দু’জন ব্যক্তিকে মোটরবাইক দিয়ে ধাক্কা মারে। এদের গ্রেফতার করে জেরা করলে পুলিশকে ধৃতরা জানায়, বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের এখানে বিশেষ খাতির–যত্ন করা হচ্ছে। তাতে তাদের মধ্যে হিংসা তৈরি হয়। আর এদের জন্যই সূর্যের ব্যবসা লাটে উঠেছে। পুলিশ পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তা দিয়েছে।