বন্যার জলে ডুবে মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারালেন একটি বেরকারি ব্যাংকের দুই কর্মী। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটে হরিয়ানার ওল্ড ফরিদাবাদ রেলওয়ে আন্ডারপাসে।
হরিয়ানা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, প্রয়াত দু'জনই এইচডিএফসি ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন হলেন ৪৮ বছরের পুণ্যশ্রে শর্মা এবং অন্যজন হলেন ২৬ বছরের বিরাজ দ্বিবেদী।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, প্রবল বৃষ্টিতে ওই আন্ডারপাসটি জলে ডুবে গিয়েছিল। এসইউভি-সহ সেই জমা জলের মধ্যেই আটকে পড়েন দুই ব্যাংক কর্মী। তার জেরেই প্রাণ হারাতে হয় তাঁদের। তাঁরা গুরুগ্রাম থেকে গ্রেটার ফরিদাবাদে তাঁদের বাড়ি ফিরছিলেন। তখনই ঘটে যায় এই মর্মান্তিক ঘটনা।
এনডিটিভি-এর প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকটির গুরুগ্রামের সেক্টর ওয়ান শাখায় কর্মরত ছিলেন প্রয়াতরা। তাঁদের মধ্যে পুণ্যশ্রে ছিলেন ব্যাংকের ওই শাখার ম্যানেজার। আর বিরাজ ওই একই শাখায় হিসাব রক্ষকের কাজ করতেন।
ঘটনার প্রত্যদর্শীরা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওই আন্ডারপাসে বিপজ্জনকভাবে জল জমে যাওয়ায় পুণ্যশ্রে ও বিরাজকে সতর্ক করা হয়েছিল। তাঁদের গাড়ি নিয়ে আন্ডারপাসের ভিতর না ঢোকার পরামর্শ দিয়েছিলেন আশপাশের মানুষজন। কিন্তু, তাঁরা সম্ভবত জলের গভীরতা বা বিপদের সম্ভাবনা সঠিকভাবে আঁচ করতে পারেননি। তাই গাড়ি নিয়ে সোজা সামনের দিকে এগিয়ে যান।
এর জেরেই ঘটে যায় বিপত্তি। গাড়িটি ক্রমশ জমা জলে ডুবতে শুরু করে। বিপদ বুঝে শেষ মুহূর্তে গাড়ি থেকে বেরিয়ে সাঁতরে নিরাপদ স্থানে পৌঁছনোর চেষ্টাও করেছিলেন ওই দুই ব্যাংক কর্মী। কিন্তু, তাঁরা ব্যর্থ হন। নিজেদের জীবন দিয়ে তার মূল্য চোকাতে হয় তাঁদের।
পুলিশ সূত্রে খবর, এলাকারই কোনও বাসিন্দা তাদের খবর পাঠায় যে ওই আন্ডারপাসে একটি গাড়ি আটকে গিয়েছে। পুলিশের দল সেখানে পৌঁছনোর পর শুরু হয় উদ্ধারকাজ। পুণ্যশ্রের দেহ বের করা হয় এসইউভি-র ভিতর থেকে। কিন্তু, বিরাজের দেহ পেতে বেগ পেতে হয় উদ্ধারকারীদের। শেষমেশ শনিবার ভোর চারটে নাগাদ তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, সমস্ত বিপদ সঙ্কেত উপেক্ষা করেই ওই দুই ব্যাংক কর্মী শুক্রবার রাত ১১টা ৫০ মিনিট নাগাদ গাড়ি নিয়ে আন্ডারপাসে ঢোকেন। গাড়িটি ডুবে যাওয়ার পর স্থানীয় বাসিন্দারা আক্রান্তদের উদ্ধার করার চেষ্টা করেও সফল হননি।
পুলিশের স্থানীয় এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই এই ঘটনার খবর মৃতদের পরিবারকে জানানো হয়েছে। সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া সারার পরই তাদের হাতে প্রিয়জনদের দেহ তুলে দেওয়া হবে।