কারখানায় কর্মরত অবস্থায় মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারাতে হল দুই শ্রমিককে। গুরুতর জখম হলেন আরও পাঁচজন। মঙ্গলবারের এই ঘটনাটি ঘটেছে ওডিশার ঝারসুগুড়া জেলার ভুবনেশ্বরে।
ঘটনায় মৃত ও আহতরা সকলেই স্থানীয় ওডিশা মেটালিক্স প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি কারখানার কর্মী ছিলেন। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, রোজের কাজ চলার সময়েই আচমকা তাঁদের উপর একটি ধাতব পাত এসে পড়ে। তার জেরেই একাধিক শ্রমিক হতাহত হন।
কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ধাতব পাতটি পড়ার পরই তিনজনকে উদ্ধার করে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই সময় তাঁদের সকলেরই অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক ছিল। কিন্তু, ঘটনাস্থল থেকে অপর দুই শ্রমিককে উদ্ধার করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। তাঁরা দীর্ঘক্ষণ ওই ধাতব পাতের নীচে আটকে থাকেন।
পরে ওই দুই শ্রমিককে উদ্ধার করা হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হয় তাঁদের। মৃত দুই শ্রমিক হলেন ৩৪ বছরের পূরণচন্দ্র জেনা এবং ৩৯ বছরের আলেক দেও সাউ। তাঁরা দু'জনই আদতে ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। কর্মসূত্রে ওডিশায় থাকতেন।
সংস্থার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবারও কারখানায় কাজ চলছিল। আক্রান্ত শ্রমিকরা একটি ব্লাস্ট ফার্নেসের কাছেই কাজ করছিলেন। বেলা ১১টা নাগাদ হঠাৎ একটি বিরাট আকারের ধাতব পাত তাঁদের উপর এসে পড়ে।
এই ঘটনার পর কারখানার বাকি শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। কারখানায় কাজ করার মতো নিরাপদ ব্যবস্থাপনা নেই বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। কাজ বন্ধ করে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে সামিল হন শ্রমিকরা।
ইতিমধ্যে, ঘটনার খবর পেয়ে কারখানায় পৌঁছয় স্থানীয় থানার পুলিশ। বিক্ষোভ ওঠাতে ক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন পুলিশকর্মীরা।
অন্যদিকে, হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আহত শ্রমিকদের অবস্থা এখনও সঙ্কটজনক। তাঁদের সকলকেই আইসিইউ-তে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা করা হচ্ছে।
ওডিশা মেটালিক্স নামক এই কারখানাটি আদতে কলকাতার রশ্মি গোষ্ঠীর মালিকানাধীন। এই সংস্থা মূলত ডাকটেল আয়রন পাইপ, আয়রন ওর পেলেট এবং টিএমটি বার নির্মাণ করে।
উল্লেখ্য, গত মাসেও সংবাদ শিরোনামে এসেছিল এই সংস্থা। সেই সময়েও কারখানার মধ্যেই কর্মরত এক শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন আরও ছ'জন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। অভিযোগ, সেবার সংশ্লিষ্ট পেলেট প্লান্টে বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস লিক হয়ে বিপত্তি ঘটেছিল।