আগামী সেপ্টেম্বরের শেষদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এয়ার ইন্ডিয়া ওয়ানে জুড়তে চলেছে দুটি বিশেষভাবে তৈরি বোয়িং-৭৭৭। যা কিনা ক্ষেপণাস্ত্রও রুখে দিতে পারে। বুধবার একথা জানিয়েছেন দুই আধিকারিক।
নাম গোপন রাখার শর্তে তাঁরা জানান, অগস্টে আমেরিকা থেকে প্রথম বিমানটি ভারতে আসবে। দ্বিতীয়টি আসবে একমাস পরে। সেই বিমানদুটি শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এবং উপ-রাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডুর সফরের জন্য ব্যবহৃত হবে।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তির নয়া বিমানে থাকবে সেল্ফ প্রোটেকশন স্যুট (এসপিএস)। থাকবে এয়ারক্র্যাফ্ট ইনফ্রারেড কাউন্টার-মেজার সিস্টেম, অ্যাডভান্সড ইন্টিগ্রেটেড ডিফেন্সিভ ইলেট্রনিক ওয়ারেফেয়ার এবং ক্ষেপণাস্ত্র হানা রুখতে বিশেষে কাউন্টার-মেজার ডিসপেন্সিং সিস্টেম। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সুরক্ষার মাপকাঠিতে বিমানদুটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট এয়ার ফোর্স ওয়ানের সঙ্গে টক্কর দেবে।
ভিভিআইপিদের সফরে ব্যবহারের জন্য উন্নত করে তুলতে দুটি নতুন বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর বিমানকে বোয়িংয়ের ডালাসের শাখায় পাঠিয়েছিল ভারত। বিমানদুটিতে মিসাইল ডিফেন্স প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য বোয়িংয়ের ১৯০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তিও হয়েছিল। বিভিন্ন ওপেন সোর্স ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, দুটি বিমানই মেরেকেটে তিন বছরের পুরনো এবং খুব রয়েসয়ে ব্যবহার করা হয়েছে।
সেন্টার ফর এয়ার পাওয়ার স্টাডিজের (ক্যাপস) ডিরেক্টর জেনারেল এয়ার মার্শাল কে কে নহওয়ার বলেন, ‘ভিভিআইপিদের সবসময় ঝুঁকি আছে। কোনও দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের সুরক্ষায় সংশ্লিষ্ট দেশকে যে পদক্ষেপ করতে হোক না কেন, তা করা উচিত।’
আপাতত প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি এবং উপ-রাষ্ট্রপতি যে বোয়িং-৭৪৭ বিমানে চড়েন, তা বাণিজ্যিক পরিষেবায় ব্যবহার করে এয়ার ইন্ডিয়া। ওই তিনজন যখন সফরে যান, তখন বিমানগুলিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করা হয় এবং এয়ার ইন্ডিয়া ওয়ানের চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। বিমানগুলির বয়সও নেহাত কম। সেগুলি প্রায় দু'দশক পুরনো।
অন্যদিকে, নয়া বিমানদুটি একেবারে অত্যাধুনিক হবে। বিমানের যে সুরক্ষা সিস্টেম থাকবে, তা শত্রুপক্ষের রেডার ফ্রিকোয়েন্সি আটকে দেবে এবং হিট-সিকিং ক্ষেপণাস্ত্রের দিকনির্ণয়ের প্রযুক্তি নষ্ট করে দিয়ে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে পারবে। এছাড়া বিমানদুটি রীতিমতো বিলাসবহুল হবে। কাজকর্মের জন্য বিশাল জায়গা থাকবে। বৈঠকের জন্য ঘর, বিভিন্ন কমিউনিকেশন সিস্টেমের পাশাপাশি স্বাস্থ্যজনিত জরুরি অবস্থা সামলানোর জন্য থাকবে একটি আলাদা অংশ। শুধু তাই নয়, তেল ভরার জন্য কোথাও না দাঁড়িয়েই ভারত থেকে আমেরিকা সরাসরি উড়ে যেতে পারবে বিমানদুটি।