বিপুল পরিমাণ সোনা-সহ পাকড়াও হয়েছিলেন কন্নড় অভিনেত্রী রানিয়া রাও। সেই ঘটনা ঘিরে এখনও তোলপাড় চলছে তো চলছেই। সেই ঘটনায় সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছিল বেঙ্গালুরুর বিমানবন্দর। আবারও একবার এই বিমানবন্দরেই ঘটে গেল ঘটনার ঘনঘটা। এবারও নেপথ্য কারণ সেই পাচারচক্র। যদিও, এবারের পাচার-পণ্য সোনা নয়, মাদক!
সংবাদমাধ্যমের হাতে এই ঘটনা প্রসঙ্গে যেমস্ত তথ্য এসে পৌঁছেছে, তা বলছে - বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর থেকে দুই বিদেশিনীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁরা দু'জনই আফ্রিকা মহাদেশের নাইজেরিয়ার বাসিন্দা। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৩৭ কিলোগ্রাম নিষিদ্ধ মাদক! ভারতীয় মুদ্রায় যার আনুমানিক বাজারদর ৭৫ কোটি টাকা!
রবিবার (১৬ মার্চ, ২০২৫) এই তথ্য সামনে এনেছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। তাদের দাবি, দক্ষিণী রাজ্য কর্ণাটকের সীমানার মধ্যে এর আগে একসঙ্গে এত বিপুল পরিমাণ মাদক কখনও উদ্ধার বা বাজেয়াপ্ত করা হয়নি!
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় যে দুই বিদেশিনীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে একজনের নাম - বাম্বা ফান্টা। তাঁর বয়স ৩১ বছর। এবং দ্বিতীয় জনের নাম অ্য়াবিগেল অ্য়াদোনিস। তাঁর বয়স ৩০ বছর।
ম্য়াঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার অনুপম আগরওয়াল সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানান, এই দুই মহিলা দিল্লি থেকে বেঙ্গালুরুর বিমান ধরেছিলেন। তাঁরা বিমানবন্দরে নামার পরই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ এমডিএমএ। যা তাঁরা তাঁদের ট্রলি ব্যাগের মধ্যে লুকিয়ে নিয়ে আসছিলেন।
এছাড়াও, ওই দুই বিদেশিনীর কাছ থেকে চারটি মোবাইল ফোন, তাঁদের পাসপোর্ট এবং ভারতীয় মুদ্রায় নগদ ১৮ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার।
তিনি আরও জানিয়েছেন, রীতিমতো দিল্লিতে ঘাঁটি গেড়ে ভারতের নানা প্রান্তে মাদক সরবরাহের কাজ করে যাচ্ছিলেন ওই দুই মহিলা। তাঁরা সবসময়েই বিমানে যাতায়াত করতেন এবং গত একবছরের মধ্যেই তাঁরা প্রায় ৩৭ বার মুম্বই গিয়েছিলেন এবং ২২ বার বেঙ্গালুরু এসেছিলেন!
তথ্য বলছে, ২০২০ সালে বিজনেস ভিসা নিয়ে ভারতে এসেছিলেন ফান্টা। কিন্তু, অ্য়াদোনিস সেই ২০১৬ সাল থেকেই ভারতে রয়েছেন। মনে করা হচ্ছে, এই দুই মহিলা মাদক পাচারচক্রে জড়িয়ে পড়েন গত এক থেকে দুই বছরের মধ্য়ে।
পুলিশ কমিশনার আরও জানিয়েছেন, মাস ছ'য়েক আগে ম্যাঙ্গালুরু শহরে হায়দার আলি নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে প্রায় ১৫ গ্রাম এমডিএমএ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। সেই ঘটনার সূত্র ধরেই এই দুই বিদেশিনীর হদিশ মেলে এবং তাঁদের গ্রেফতার করার ব্যবস্থা করা হয়।
তবে এই দুই মহিলাকে ধরার আগে আরও এক মাদকপাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বেঙ্গালুরু থেকে। তাঁর নাম পিটার এবং তিনিও নাইজেরিয়ার নাগরিক। তাঁর কাছ থেকে ৬ কিলোগ্রাম এমডিএমএ উদ্ধার করা হয়েছিল।