আবারও ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা। আবারও মৃত্যু। এবারের ঘটনাস্থল মহারাষ্ট্রের পুণে জেলার ইন্দপুর। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে দুই ট্রেনি পাইলট বা শিক্ষানবীশ বিমান চালকের। ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন আরও দু'জন। সোমবার ভোর রাতে এই প্রাণঘাতী দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ওই ট্রেনি পাইলটরা যে গাড়িতে করে যাচ্ছিলেন, সেটি হঠাৎই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের একটি গাছে ধাক্কা মারে। সেই ধাক্কার অভিঘাত এতটাই ভয়াবহ ছিল যে ট্রেনি পাইলটদের গাড়িটি দুমড়ে মুচড়ে উল্টে যায়। সোমবার ভোর রাত, ৩টে ১৫ মিনিট নাগাদ এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানা গিয়েছে।
এই দুর্ঘটনায় মৃত দুই ট্রেনি পাইলট হলেন - আদিত্য কানাসে এবং তক্ষু শর্মা। তাঁদের দু'জনেরই বয়স ২১ বছর। এঁদের মধ্যে আদিত্য মুম্বইয়ের বাসিন্দা এবং তক্ষুর বাড়ি দিল্লিতে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনায় আহত দু'জন হলেন যথাক্রমে - কৃষ্ণা ইশু সিং এবং চেষ্টা বিষ্ণোই। তাঁদেরও বয়স ২১ বছর। কৃষ্ণার বাড়ি বিহারে এবং চেষ্টা আদতে রাজস্থানের বাসিন্দা। এঁদের মধ্যে কৃষ্ণা ওই গাড়িটি চালাচ্ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
তথ্য বলছে, আহত দু'জনের মধ্যে চেষ্টার অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। ওই তরুণী কোনও মতে প্রাণে বেঁচে গেলেও, শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, দুর্ঘটনার পর থেকে থেকে একবারও তাঁর জ্ঞান ফেরেনি। ফলত, তাঁকে নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
ভিগওয়ান পুলিশের হাতে দুর্ঘটনার কারণ ও প্রেক্ষাপট সম্পর্কে যে প্রাথমিক তথ্য এসেছে, সেই অনুসারে, হতাহত চার তরুণ-তরুণীই আদতে ট্রেনি পাইলট। তাঁরা একটি চারচাকা এইউভি নিয়ে মহারাষ্ট্রের বারামতী থেকে ভিগওয়ানের দিকে যাচ্ছিলেন।
কিন্তু, গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই লামজেওয়াড়ির কাছে গাড়ির চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন এবং সজোরে ধাক্কা মারে রাস্তার পাশের একটি গাছে। গাড়িটি রাস্তা থেকে হড়কে গিয়ে ওই গাছে ধাক্কা মারে। সেইসঙ্গে, পাশেই থাকা একটি পাইপ লাইনেও ধাক্কা মারে গাড়িটি।
দুর্ঘটনার পর আহত দুই সওয়ারিকে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে ভিগওয়ানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আপাতত সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাঁরা।
পুলিশের প্রাথমিক অনুসন্ধানে আরও উঠে এসেছে, এই চার তরুণ-তরুণী সকলেই বারামতীতে অবস্থিত রেড বার্ড অ্যাভিয়েশন অ্যাকাডেমির ছাত্র-ছাত্রী।
অনুমান করা হচ্ছে, রবিবার রাতে তাঁরা চারজনই মদ্যপান করেছিলেন। এবং সেই অবস্থাতেই রাতের রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন।
পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনায় মৃতদের দেহ ময়নাতদন্ত করতে পাঠিয়ে দিয়েছে। সেই প্রক্রিয়া শেষ হলে পরিবারের সদস্যদের হাতে দেহগুলি তুলে দেওয়া হবে। অন্যদিকে, আহত দুই সওয়ারির স্বাস্থ্যের উন্নতি হলে তাঁদের সঙ্গেও কথা বলা হবে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় মামলা রুজু করা হয়েছে।