রাজধানী দিল্লির রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মুখ পুড়ল অ্য়াপ ক্যাব সংস্থা উবারের। নির্দিষ্ট সময়ে ক্যাব পরিষেবা দিতে না পারায় স্থানীয় এক বাসিন্দাকে উবার কর্তৃপক্ষ যাতে ক্ষতিপূরণবাবদ ৫৪ হাজার টাকা দেয়, সেই নির্দেশ দেওয়া হল তাদের।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসার, এর আগে এই মামলায় জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতেও উবারের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছিল। রাজ্যস্তরের মোকদ্দমার শুনানি শেষে সেই রায়ই বহাল রাখা হয়। এমনকী, উবেরের এই অপেশাদার আচরণকে 'পরিষেবার ঘাটতি' বলেও তোপ দাগা হয়।
জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত কী নির্দেশ দিয়েছিল?
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে এই নির্দিষ্ট মামলাটিতে অভিযোগকারী গ্রাহকের পক্ষে রায় ঘোষণা করেছিল জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত।
উবারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, দিল্লির ওই বাসিন্দাকে সঠিক পরিষেবা না পাওয়ার ক্ষতিপূরণবাবদ ২৪,১০০ টাকা দিতে হবে। পাশাপাশি, এই ঘটনার জন্য গ্রাহককে যে মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে এবং মামলাবাবদ যে যে খরচ করতে হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ হিসাবে আরও ৩০,০০০ টাকা দিতে হবে।
কী ঘটেছিল?
যে ঘটনা নিয়ে এত কাণ্ড, সেটি ঘটেছিল ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে। দিল্লির বাসিন্দা উপেন্দ্র সিংয়ের সেদিন বিমানে ইন্দোর যাওয়ার কথা ছিল। এর জন্য দুপুর ৩টে ১৫ মিনিটে তিনি উবারের মাধ্যমে একটি ক্যাব বুক করেন।
কিন্তু, সেই বুক হওয়া ক্যাব, যাতে চড়ে উপেন্দ্রর দিল্লি বিমানবন্দরে যাওয়ার কথা ছিল, সেই ক্যাব আর এসে পৌঁছয়নি। এমনকী, উপেন্দ্র সংশ্লিষ্ট নম্বরে একাধিকবার ফোন করেও কোনও সাড়া পাননি। ফলত, সেদিন সেই বিমান 'মিস' করেন ওই যাত্রী।
এই গোটা ঘটনার জন্য উবার কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে আইনের দ্বারস্থ হন উপেন্দ্র সিং। তিনি জানান, উবেরের ক্যাব না আসায় বাধ্য হয়েই লোকাল ট্যাক্সি ধরে বিমানবন্দরে পৌঁছন তিনি ও তাঁর স্ত্রী। কিন্তু, সেখানে পৌঁছতে তাঁদের ৫টা ১৫ বেজে যায়।
এর ফলে নির্ধারিত বিমানটি আর ধরতে পারেননি সিং দম্পতি। উপরন্তু, তাঁদের ফেরার বিমানের টিকিট আগে থেকেই কাটা থাকায় ওই দম্পতি ইন্দোরে তাঁদের পরিবারের সঙ্গে ১২ ঘণ্টারও কম সময় কাটিয়ে ফিরতি বিমান ধরতে বাধ্য হন।
উপেন্দ্র সিং আরও জানিয়েছেন, এই ঘটনার পর একাধিকবার উবার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ নিয়ে তিনি যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু, তাদের তরফে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই উবারকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান তিনি। কিন্তু, তারপরও উবারের কোনও হেলদোল না হওয়ায় শেষমেশ জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন উপেন্দ্র।
এই মামলায় জেলা এবং রাজ্য - দুই স্তরেই উবার কর্তৃপক্ষকে তাদের এহেন পরিষেবার ঘাটতির জন্য সমালোচিত হতে হয়েছে। যার জেরে গত ১১ নভেম্বরের নির্দেশিকায় রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রায়ই বহাল রেখেছে।