মহারাষ্ট্র কি নতুন কোনও ‘খেলা’-র সাক্ষী থাকতে চলেছে? মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীসের একটি মন্তব্যের পরে এমনই জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। সাংবাদিক বিবেক ঘালসাসির সাক্ষাৎকারে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা বলেন, ‘রাজনীতিতে কোনও কিছুই নিশ্চিত নয়। আগে উদ্ধব ঠাকরে বন্ধু ছিলেন। তারপর রাজ ঠাকরে (মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার প্রধান) বন্ধু হলেন। এখন রাজ ঠাকরে বন্ধু এবং উদ্ধব ঠাকরে শত্রু নন।’ আর তারপরই জল্পনা শুরু হয়েছে যে তাহলে কি উদ্ধবের সঙ্গে আবারও হাত মেলাতে চলেছেন ফড়ণবীসরা? শিবসেনার (উদ্ধব ঠাকরে শিবিব) সঙ্গে বিজেপির কি ফের মেলবন্ধন হতে চলেছে?
উদ্ধব এবং ফড়ণবীসের ‘পুনর্মিলন’ হচ্ছে?
সেটার উত্তর মেলেনি। কিন্তু ফড়ণবীসের মন্তব্য নিয়ে জল্পনা থামেনি। বিশেষত বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে যেভাবে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন উদ্ধব ও তাঁর ছেলে আদিত্য, সেটার পরে ফড়ণবীসের মন্তব্যকে নেহাতই ‘সৌজন্য’ হিসেবে ভাবতে রাজি নন একাংশ।
শুধু তাই নয়, জল্পনায় ‘ঘি’ ঢেলেছে ফড়ণবীসের সঙ্গে উদ্ধব-পুত্র আদিত্যের সাক্ষাতও। শীতকালীন অধিবেশনের অভ্যর্থনা-পর্বের পরে ‘জনস্বার্থের বিষয়’ নিয়ে আলোচনা করতে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আদিত্য দু'বার দেখা করেছেন বলে একটি মহলের তরফে দাবি করা হয়েছে। সবমিলিয়ে উদ্ধব এবং ফড়ণবীসের ‘পুনর্মিলন’ নিয়ে জল্পনা বেড়েছে।
উদ্ধব ও ফড়ণবীস একই শিবিরে ছিলেন একসময়!
একটা সময় অবশ্য উদ্ধব ও ফড়ণবীসরা একই শিবিরে ছিলেন। ২০১৪ সালে ফড়ণবীস যখন মহারাষ্ট্রের কুর্সিতে বসেছিলেন, তখন বিজেপির সঙ্গে অবিভক্ত শিবসেনা ছিল। ২০১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও একসঙ্গে লড়াই করেছিল বিজেপি এবং অবিভক্ত শিবসেনা। কিন্তু নির্বাচনের পরে মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে জটিলতার জেরে সেই জোটে ফাটল ধরে যায়। বিজেপিকে ছেড়ে কংগ্রেস এবং এনসিপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ফেলেন উদ্ধব।
কংগ্রেস ও শরদদের অবস্থা ভয়াবহ হয়েছে
যদিও উদ্ধবের দলে ভাঙন ধরিয়ে পরবর্তীতে একনাথ শিন্ডের শিবসেনা এবং অজিত পাওয়ারের এনসিপি নিয়ে সরকার গঠন করেছিল বিজেপি। আর ২০২৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও শিন্ডে ও অজিতের দলের সঙ্গে হাতে মিলিয়ে লড়েছে পদ্মশিবির। আর বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। অন্যদিকে শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে শিবির), কংগ্রেস এবং এনসিপি (শরদ পাওয়ার শিবির) জোট পুরোপুরি ধসে গিয়েছে। উদ্ধবরা তাও মন্দের ভালো ছিলেন। কংগ্রেস এবং শরদের এনসিপির হাল তো ভয়ংকর খারাপ হয়েছিল। আর সেই পরিস্থিতিতে উদ্ধবকে নিয়ে ফড়ণবীসের মন্তব্যে মহারাষ্ট্রে নতুন কোনও ‘খেলা’-র ইঙ্গিত পাচ্ছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।