টাইপ ১ ডায়াবিটিসে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন ব্রিটেনের ৭১ বছর বয়সি বয়স্কা ডানিয়েল কারকমন। রোগ সারানোর জন্য নানারকম টোটকারও খোঁজ করছিলেন তিনি। অবশেষে একটি অভিনব টোটকার খোঁজ পান তিনি। সেই টোটকা হল নিজেকে চড় মারা। ব্রিটেনের বুকেই পাইদা লাজিন থেরাপি নামে এই থেরাপি শেখানো হয়। সেই থেরাপি ঠিকমতো নিতে পারলেই নাকি রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। কিন্তু পাইদা লাজিন নামের ওই থেরাপি নিতে গিয়েই কাল হল শেষে। চড়ের চোটে রীতিমতো মৃত্যু হল তাঁর।
(আরও পড়ুন: নিরাপদ নয় মেলও! এক ক্লিকে উধাও হতে পারে ব্যাঙ্কের টাকা! বাঁচবেন কীভাবে)
৭১ বছর বয়সি ডানিয়েল কারকমনের মৃত্যু হয় ২০১৪ সালের ২০ অক্টোবর। ক্লিভ হাউসে তাঁর নিজের ঘরে তাঁকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। এই ঘটনায় সরাসরি জড়িত না থাকলেও ওই থেরাপির মাথাকে অন্যতম দোষী সাব্যস্ত করেছে পুলিশ।
হোংচি শিয়াও নামক এক ব্যক্তি ছিলেন সেই থেরাপি শেখানোর দায়িত্বে। তাঁর নিজের লেখা একটি বই রয়েছে এই বিষয়ে। পাশাপাশি ব্রিটেনের বুকে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন তিনি। তা হল ‘হিল ইয়োরসেল্ফ ন্যাচারালি নাও’। এর সঙ্গে নিজের থেরাপিকে বিখ্যাত করতে নিয়মিত বেশ কিছু টক শোও আয়োজন করেন তিনি। তা থেকেই তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। যা দেখে আকৃষ্ট হন ডানিয়েল।
(আরও পড়ুন: টাইপ ৩ ডায়াবিটিসই নাকি মস্তিকের এক কঠিন রোগের কারণ! কেন বলছেন বিশেষজ্ঞরা)
পাইদা লাজিন থেরাপি আদতে কী?
পাইদা লাজিন চিনের এক প্রাচীন থেরাপি। এই থেরাপি বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস, রক্তে নানা দূষিত পদার্থ থাকে। সেই দূষিত পদার্থগুলি রক্ত থেকে বেরিয়ে গেলেই রক্ত শুদ্ধ হয়ে যায়। সেরে যায় অনেক রোগ। যার মধ্যে অন্যতম হল ডায়াবিটিস। এই থেরাপিতে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়। তাই রক্তের মধ্যে থাকা দূষিত পদার্থ বার হয়ে যায়।
কীভাবে এই থেরাপি প্রয়োগ করা হয়?
এক্ষেত্রে আপনাকে আপনি নিজে বা অন্য কেউ চড় মারতে পারেন। শুধু গালে নয়, শরীরের নানা জায়গায় চড় মারতে হয়। তাতেই রক্ত ধীরে ধীরে শুদ্ধ হতে থাকে বলে দাবি।
কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞানীদের কথায়, এতে ত্বকের নিচে রক্তজালিকা ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। পাশাপাশি, ত্বক লাল হয়ে যায়। হোংচি শিয়াওকে এই অস্ট্রেলিয়া থেকে ফেরার পথেই আটক করা হয়। পেশ করা হয় আদালতে। তাঁর থেরাপিকে ব্রিটিশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন মান্যতা দেয়নি। তাই বেআইনি থেরাপি করার জন্যই তাঁর নামে মামলা করা হয়েছে।