কোভিডের মতো অতিমারীর মধ্য দিয়ে সবে মাত্র এক বড় লড়াই শুরু করেছে বিশ্ব। তাই মাঝে ইউক্রেনের মাটিতে আছড়ে পড়ছে পর পর রুশ রকেট। সদ্য শুরু হওয়া ইউক্রেনে রুশ হামলার জেরে গোটা বিশ্ব আতঙ্কে রয়েছে। শুধু যে দুটি দেশ এতে পরিশ্রান্ত তা নয়, যুদ্ধের সূত্র মেনে এর প্রভাব বিস্তার লাভ করছে বিশ্বের বহু ক্ষেত্রে। সুদূর ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার মাঝে যেমন রক্তস্নাত কিয়েভ থেকে কাৎখিভের রাস্তাঘাট, তেমনই এর আর্থিক প্রভাব ভারতের চা বাগানে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ভারতের চা রপ্তানির একটি বড় অংশ যায় রাশিয়ায়। ভারতের চায়ের সবচেয়ে বড় ক্রেতা রাশিয়া। দেশের মোট চা রপ্তানির ১৮ শতাংশ যায় রাশিয়ায়। ইউক্রেন ও কাজাখস্তানে সেই চা রপ্তানির পরিমাণ ধরলে তা ২২ থেকে ২৪ শতাংশের অংশে পৌঁছায়। এদিকে, যদি ইউক্রেনে রুশ হামলার জেরে পশ্চিমী দেশগুলি রাশিয়ার ডলারে পেমেন্ট সিস্টেমে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেয়, তাহলে তার প্রবল বাণিজ্যিক প্রভাব পড়বে ভারতের চা বাগানে। ইতিমধ্যেই এক্সপোর্ট ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া রাশিয়ায় রপ্তানী করা পণ্যের দাম ফেরতের গ্যারান্টির প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়েছে শুক্রবার থেকে। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ায় ভারতের চা রপ্তানী নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে চা বাগান। এদিকে, উত্তরবঙ্গের চাবাগানগুলি থেকে একটা বড় অংশের চা কাজাখস্তান, রাশিয়া, ইউক্রেনে রপ্তানী করা হয়। এদিকে, চা রপ্তানির টাকা ফেরতের নিশ্চয়তা না পেলে রাশিয়ায় ভারতের চা ব্যবসার একটি বড় ক্ষতি সামনে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, রাশিয়া বনাম ইউক্রেনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের জেরে সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিশ্ব বাণিজ্যে পড়তে পারে বলে আগেই আশঙ্কা করা হয়েছিল। কোভিডের জেরে যেখানে গত ২ বছরে কার্যত ধরাশায়ী বহু উৎপাদন ক্ষেত্র, সেখানে এই যুদ্ধ মধ্যবিত্তের পকেটে টান ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা। লকডাউনে বহুদিন বন্ধ ছিল চাবাগান। আর তার জেরে প্রভাব পড়ে চা শিল্পে। এরপর নতুন করে রাশিয়ার যুদ্ধের জেরে ভারতের চাবাগানগুলিতে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে। এদিকে, ইউক্রেনে রুখশ হামলার ফলে বিশ্বজুড়ে অপরিশোধিত তেলের দাম হু হু করে বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যার জেরে পেট্রোল, ডিজেল মহার্ঘ হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। গ্যাস উৎপাদক রাশিয়ার হামলার জেরে বাড়তে পারে রান্নার গ্যাসের দামও। ফলে সবমিলিয়ে যুদ্ধের জেরে প্রভাবিত। গোটা দুনিয়া।