পূর্ব ইউক্রেনীয় শহর সুমিতে এখনও আটকা পড়ে রয়েছে ৭০০ ভারতীয় নাগরিক। তীব্র লড়াই এবং গোলাগুলির মধ্যে তাঁদের সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করার প্রচেষ্টা জোর কদমে চললেও কোনও মসাধান সূত্র এখনও পর্যন্ত বের করা সম্ভব হয়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার বাঙ্কারে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন এই পড়ুয়ারা। তাদের সরিয়ে নেওয়ার সুবিধার্থে স্থানীয়ভাবে যুদ্ধবিরতির জন্য ভারতীয় পক্ষ আহ্বান জানালেও রাশিয়া এবং ইউক্রেন এখনও এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি বলে জানা গিয়েছে।
এর আগে মরিয়া হয়ে ভারতীয় পড়ুয়ারা এক ভিডিয়ো বার্তা প্রকাশ করে জানান যে তাঁরা সুমি থেকে ৬০০ কিমি দূরে মাউরিপোলে যাবেন পায়ে হেঁটে। পাশাপাশি তাঁরা ‘হুঁশিয়ারি’ দেন, যাত্রাপথে কোনও ভারতীয়র কিছু যদি হয়, তার জন্য দায়ী থাকবে সরকার ও দূতাবাস। যদিও এই ভিডিয়ো বার্তা ভাইরাল হওয়ার পরপরই ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি জারি করে পড়ুয়াদের সুমিতেই নিরাপদ স্থানে থাকতে বলা হয়। আশ্বাস দেওয়া হয় যে যত দ্রুত সম্ভব তাদের সেখান থেকে বের করে আনা হবে। তবে সেই আশ্বাসের পর এখনও পর্যন্ত কোনও পড়ুয়াকে সেখান থেকে বের করে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধের জেরে গত কয়েকদিন ধরে ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনার জন্য ভারত সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছে। চালু করা হয়েছে অপারেশন গঙ্গা। এই অভিযানের তদারকি করতে ইউক্রেনের পড়শি দেশগুলিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এই আবহে এখনও কয়েক হাজার পড়ুয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। কিয়েভে আর কোনও ভারতীয় নেই। যুদ্ধ বিধ্বস্ত খারকিভ থেকেও সব পড়ুয়াকে ইউক্রেন থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে সুমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৭০০ ভারতীয় পড়ুয়ার কাউকেই এখনও ইউক্রেন থেকে উদ্ধার করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেন ছাড়তে মরিয়া হয়ে পড়েছেন সুমি স্টেট ইউনিভার্সিটির ভারতীয় পড়ুয়ারা। তাঁদের কাছে না আছে খাবার না আছে জল।
এই পরিস্থিতিতে অবশ্য কিয়েভে ভারতীয় দূতাবাসের তরফে টুইট করে লেখা হয়, ‘ভারতীয় দূতাবাসের দল পোলতাভা শহরে রয়েছে। সুমিতে আটকে পড়া ভারতীয় ছাত্রদের পোলতাভা হয়ে পশ্চিম সীমান্তে নিরাপদ পথের নিয়ে যেতে সমন্বয়ের জন্যই সেখানে তারা অবস্থান করছে। উদ্ধারকাজ শুরুর নিশ্চিত সময় এবং তারিখ শীঘ্রই জানানো করা হবে... শিক্ষার্থীরা যাতে সংক্ষিপ্ত নোটিশেই চলে আসতে পারেন, তার জন্য প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’ আর এখন যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন ছাড়ার জন্য দিন গুনছেন আটকে পড়া ভারতীয়রা।