‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’, ‘পারমাণবিক যুদ্ধ’... আতঙ্ক ক্রমেই বাড়ছে৷ এই আবহে রুশ হামলায় দাউ দাউ করে জ্বলছে ইউরোপের সর্ববৃহৎ পারমাণবিক চুল্লি৷ ইউক্রেনের এনেরহোডারে অবস্থিত জাপোরিঝঝিয়া নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টে রুশ বাহিনী গতকাল গভীর রাতে হামলা চালায় বলে দাবি করা হয়েছে ইউক্রেন সরকারের তরফে৷ হামলায় আগুন জ্বলতে শুরু করেছে এই প্ল্যান্টে৷ এদিকে রুশ বাহিনী লাগাতার গোলাবর্ষণ জারি রেখেছে৷ যার জেরে এই প্ল্যান্টের আগুন নেভানো সম্ভব হচ্ছে না৷
ইউক্রেনের দক্ষিণে নাইপার নদীর তীরে অবস্থিত এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ইউক্রেনের মোট বিদ্যুতের চাহিদার এক চতুর্থাংশ মেটানো হয়৷ ইউক্রেনের তরফে জাপোরিঝঝিয়া নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টের উপর হামলা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে রাশিয়াকে৷ ইউক্রেনের দাবি, এই প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ ঘটলে তা হবে চরম বিপর্যয়ের৷ সমগ্র ইউরোপের কাছেও ইউক্রেন আবেদন জানিয়েছে যাতে রাশিয়ার এই হামলা ঠেকানোর জন্য যেকোনও পর্যায়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়৷
এদিকে যে সময় জাপোরিঝঝিয়া নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টে এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে, সই সময় দ্বিতীয় দফায় আলোচনায় বসেছিল ইউক্রেন ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা৷ সাধারণ নাগরিকদের সুরক্ষিত জায়গায় পাঠাতে ‘মানবিক করিডর’ তৈরি করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় সেই বৈঠকে। তবে সার্বিকভাবে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় কোনও রফাসূত্র বেরোয়নি। ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, দ্রুত তৃতীয় পর্যায়ের বৈঠকে বসবে দুই দেশ।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দাবি করেন, রাশিয়াকে ঠেকাতে হবে নাহলে ইউরোপের বাকি অংশেও রুশ সেনা অগ্রসর হবে। তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘বিশ্বাস করুন, ইউক্রেন যদি না থাকে তাহলে লাটভিয়া, লিথুয়েনিয়া, এস্টোনিয়াও আর থাকবে না।’ উল্লেখ্য, এককালে এই দেশগুলি সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরবর্তীতে স্বাধীনতা অর্জনের কিছু পরেই এরা ন্যাটোতে যোগদান করেছিল। আর এই ন্যাটোই হল পুতিনের 'দুই চোখের বিষ'।