গতকালই নির্দেশিকা জারি করে কিয়েভে ভারতীয় দূতাবাসের তরফে পড়ুয়াদের শহর ছাড়তে বলা হয়েছিল। আর এপর গতকাল রাতে বিদেশ সচিব হর্ষ শ্রীংলা জানিয়ে দিলেন যে ইউক্রেনের রাজধানীতে আর কোনও ভারতীয় পড়ুয়া নেই এখন। তিনি জানান, ইউক্রেনের পড়শি দেশগুলি থেকে মোট ২৬টি উড়ানে আগামী তিনদিনে ভারতীয়দের দেশে ফেরানো হবে।
মঙ্গলবার বিদেশ সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রীংলা বলেন যে ভারত কিছু সতর্কতামূলক বিবেচনার ভিত্তিতে এবং দেশের সর্বোত্তম স্বার্থের ভিত্তিতে রাষ্ট্রসংঘে নিজেদের অবস্থান গ্রহণ করে। উল্লেখ্য, রাষ্ট্রসংঘে রাশিয়ার বিপক্ষে গিয়েছে আমেরিকা ও মিত্র শক্তির একটি বড় অংশ। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোভুক্ত সব দেশ ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে। এদিকে ভারতও ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে রাশিয়া বিরোধিতা করতে দেখা যায়নি ভারতকে। এই আবহে রাষ্ট্রসংঘে ভারতের অবস্থান বদলের প্রসঙ্গ উঠেছে।
এর আগে শনিবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার ‘আগ্রাসনের’ নিন্দা করেও মার্কিন-সমর্থিত UNSC রেজোলিউশনে ভোটদান থেকে বিরত থেকেছিল ভারত। এমনকি এটি রাষ্ট্রগুলির সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি কূটনৈতিক এবং সম্মানের পথে ফিরে আসার উপর জোর দিলেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেয়নি। তবে এরই মধ্যে ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয়দের ফেরাতে ইউক্রেন ও রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে ভারত। পাশাপাশি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের আবেদনে সাড়া দিয়ে ভারত সাহায্যও পাঠিয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশে।
এদিকে বিদেশ সচিব মঙ্গলবার বলেন যে আগামী তিন দিনের মধ্যে বুখারেস্ট এবং বুদাপেস্ট থেকে ভারতীয় নাগরিকদের ফিরিয়ে আনা হবে। তাছাড়া পোল্যান্ড এবং স্লোভাক প্রজাতন্ত্রের বিমানবন্দরগুলিও ব্যবহার করা হবে। এর জন্য মোট ২৬টি ফ্লাইট নির্ধারিত হয়েছে। তিনি আরও জানান, ইউক্রেনে থাকা প্রায় ৬০ শতাংশ ভারতীয় সেই দেশ ছেড়েছেন। বাকি যে ৪০ শতাংশ এখনও ইউক্রেনে আটকে, তাঁদের অধিকাংশই এমন এলাকায় আটকে যেখানে সংঘর্ষ হচ্ছে। উল্লেখ্য, খারকিভে গতকালই ভারতের এক নাগরিক প্রাণ হারান একটি বিস্ফোরণে। তিনি জানান, মঙ্গলবার পর্যন্ত ৭৭০০ ভারতীয় ইউক্রেন ছেড়েছেন। এর মধ্যে ২ হাজার জন ভারতে ফিরেছেন ইতিমধ্যেই। বাকিরা ইউক্রেনের পড়শি দেশগুলিতে বিমানের জন্য অপেক্ষা করছেন।