৭২ ঘণ্টা অতিক্রান্ত। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হামলার তীব্রতা। রুশ ক্ষেপণাস্ত্র–ট্যাঙ্ক–গুলির সামনে দাঁতে দাঁত চেপে লড়ছে গোটা ইউক্রেন। তার মধ্যেই দক্ষিণ–পূর্ব ইউক্রেনের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর মেলিটোপোলের দখল নিল রুশ সেনা। যুদ্ধের তৃতীয় দিনেও রাজধানী কিভের উপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনী। তবে ইউক্রেন ফৌজের বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ক্ষয়ক্ষতির জেরে বিমান হামলার সংখ্যা কমেছে।
কিয়েভ দখল করতে গিয়ে প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়ে রাশিয়ার সেনা। প্যারাট্রুপার নামিয়েও লাভ হয়নি। ইন্ডিপেন্ডেন্স স্কোয়ার থেকে ৩০ কিমি দূরে আটকে গিয়েছে তারা। ইতিমধ্যে বেলারুশে গিয়ে আলোচনায় বসার প্রস্তাব পর্যন্ত ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কিভের একটি বহুতলে আছড়ে পড়ে রুশ হাইপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। তার জেরে ভেঙে পড়ে বহুতলটির একাংশ। ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী দ্রিমিত্র কুলেবা ও কিভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো ওই বহুতলের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদামির জেলেনস্কিকে কিয়েভ ছাড়ার প্রস্তাব দিয়েছিল আমেরিকা। সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেছেন, ‘পালিয়ে যেতে চাই না। আমরা ওদের রুখে দিয়েছি। এখন যুদ্ধের জন্য গোলা-বারুদ চাই।’
এই পরিস্থিতিতে কিভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো লিখেছেন, ‘বাড়িতে আঘাত হেনেছে একটি ক্ষেপণাস্ত্র।’ ইউক্রেনে চারিদিক থেকে আক্রমণ বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রুশ সেনাকে। একটি বিবৃতিতে এই কথা জানিয়েছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। শহরের ব্যস্ত এলাকায় বহুতলে আছড়ে পড়ে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র। তারপরই কিয়েভের রাস্তায় শুরু হয় দু’পক্ষের মুখোমুখি লড়াই।
রুশ সেনার এগিয়ে আসার খবর পেয়েই ১৮ ঊর্ধ্ব সবাইকে দেশরক্ষায় অস্ত্র হাতে নেমে পড়ার আহ্বান জানিয়ে ছিলেন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তাতে সাড়া দিয়েছেন প্রাক্তন সেনাকর্মী, সংসদ সদস্য থেকে সাধারণ নাগরিক। রাইফেল-শটগান কাঁধে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছেন রাশিয়ার সেনার সামনে। রাজপথে দাঁড়িয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন স্বয়ং প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। রাস্তা থেকে তোলা সেলফি ভিডিও’য় দেখা গিয়েছে, তাঁর পরনে সেনার জলপাই পোশাক। দেশরক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ গলা, ‘আমি এখানেই রয়েছি। আমরা আত্মসমর্পণ করব না। প্রতিরোধ গড়ে তুলব। অস্ত্রই আমাদের সবচেয়ে বড় সত্য।’